পাহাড়ি গরু যাচ্ছে সমতলে, জমেনি রাঙামাটির পশুর হাট 

পাহাড়ি গরু যাচ্ছে সমতলে। ছবি: নিউজ টোয়েন্টিফোর

পাহাড়ি গরু যাচ্ছে সমতলে, জমেনি রাঙামাটির পশুর হাট 

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। আগামী ২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইদুল আজহা। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন পাহাড়ের গরু ব্যবসায়ীরা । পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে রঙ বেরঙের গরু।

তবে জমে ওঠেনি রাঙামাটির গরুর হাট। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা ঘুরে ফিরে চলে যাচ্ছেন। অপেক্ষা করছেন দাম কমার। এ কারণে গরু ব্যবসায়ীরাও পাহাড় থেকে গরু কিনে তা বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন সমতলে।

সাধারণত এসব গরু বন-জঙ্গলে লতাপাতা খেয়ে বেড়ে ওঠে। তাই গরুর স্বাস্থ্য ধরে রাখতে কোন রকম কৃত্রিম ওষুধও প্রয়োগ করতে হয় না। এসব পাহাড়ি গরুর চাহিদাও অনেক বেশি। তাই বেশি লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা গরু সংগ্রহ করছেন রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল থেকে। তবে স্থানীয় চাহিদা না মিটিয়ে এসব গরু যাচ্ছে সমতলে। রাঙামাটির পশু হাটগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী গরু মিলছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

জানা গেছে, রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই, বরকল, লংগদু, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলা থেকে প্রতিদিন আনা হচ্ছে শত শত পাহাড়ি গরু। রাঙামাটি শহরে তিনদিন আগে গরুর হাট প্রস্তুত করা হলেও এখনো জমেনি।  হাটগুলোতে ক্রেতাদের ভীড়  থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না গরু। সোমবার বিকেল পর্যন্ত সব মিলিয়ে খুব বেশি হলে ৫-৬টি গরু বিক্রি হয়েছে। তাও সুলভে। কারণ বিভিন্ন দালাল চক্রের কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ জেলার বাইরে।

রাঙামাটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. জামাল উদ্দীন জানান, রাঙামাটি শহরে এবার পশুহাট বসানো হয়েছে মাত্র দুইটি। পৌরসভা থেকে ইজারা নিয়ে বসানো হয়েছে পৌর ট্রাক টার্মিনালের পশুর হাট এবং জনগণের সুবিধার জন্য নিজেদের উদ্যোগে রিজার্ভ বাজারের শুটকি পল্লীতে পশুর হাট বসিয়েছে রিজার্ভবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে নিজেদের সুবিধামতো এ হাটে পশু কেনাবেচা করতে পারবে। সেখানে দালালদের কোনো রকম উৎপাতের সুযোগ থাকবে না।  

স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী মো. জমির উদ্দীন জানান, রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রচুর পরিমাণে গরু আসতে শুরু করেছে। আজ-কালের মধ্যে আরও গরু আসবে। তবে স্থানীয়ভাবে বেচাকেনা জমছে না। কিছু কিছু ক্রেতা দাম যাচাই করতে আনাগোনা করলেও গরু কিনছেন না। তবে দাম নাগালের বাইরে নয়।  

অন্যদিকে অভিযোগ রয়েছে, রাঙামাটিতে পশুর হাটগুলোতে দালাল চক্রের দৌরাত্ম বেড়েছে। তাদের খপ্পরে পড়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই ঠকছেন।  

দালাল চক্র ও জালনোট চিহ্নিত করার জন্য পুলিশের বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মো. সাঈদ তারিকুল হাসান । তিনি বলেন, আসন্ন কোরবানি ঈদকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে পশুর হাটে জালনোট চিহ্নিত করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে আটটি মেশিন দেওয়া হয়েছে। দালাল চক্রের দৌরাত্ম কমানোর জন্য সাদা পোশাকেও পুলিশের বিশেষ দল সার্বক্ষণিক থাকছে পশুর হাটে। স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার্থে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।

সম্পর্কিত খবর