অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে কোথায় কখন বজ্রপাত হবে

প্রতীকী ছবি

অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে কোথায় কখন বজ্রপাত হবে

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানোর লক্ষ্যে দেশবাসীকে আগাম সতর্কবার্তা দিতে বাংলাদেশের ৮টি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

ঢাকায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ছাড়াও ময়মনসিংহ, সিলেট, পঞ্চগড়, নওগাঁ, খুলনা পটুয়াখালী এবং চট্টগ্রামে এই সেন্সর বসানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আটটি ডিটেকটিভ সেন্সরের যন্ত্রপাতি কেনায় খরচ হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক মজিদুল ইসলাম জানান, বজ্রপাতের সতর্কতামূলক তথ্য পাওয়ার পর তা তাৎক্ষণিকভাবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের রিয়েল টাইমে প্রচার করা হবে।

এছাড়াও মোবাইলে ওয়েদার অ্যাপের মাধ্যমে যে কেউ সেই তথ্য পাবেন। তবে এই সতর্কবার্তার ব্যাপারে ক্ষুদেবার্তা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে তিনি জানান।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ৮ বছরে বজ্রপাতের ঘটনায় ১ হাজার ৮শ'র বেশি মানুষ মারা গেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে সম্প্রতি বজ্রপাত বেশি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনাও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে।

তাই বজ্রপাতকেও একটি দুযোর্গ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসানোর কথা জানায় তারা।

আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশ এই সেন্সর ব্যবহার করে সুফল পেয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

আবহাওয়া দপ্তর এত দিন ধরে রাডার বা স্যাটেলাইট থেকে নেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রেডিও, টেলিভিশন বা ওয়েবসাইটে বজ্রপাতের পূর্বাভাস দিয়ে আসত।

তবে এই নতুন ডিটেকটিভ সেন্সরের মাধ্যমে বজ্রপাতের সুনির্দিষ্ট স্থান ও সময়ের ব্যাপারে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে।

সেন্সরগুলোতে ধারণ করা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ১০-১৫ মিনিট আগেই বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানোর মাত্রা জানানো সম্ভব।

এছাড়া কোন এলাকায়, কতক্ষণ ধরে বজ্রপাত হয়েছে সে সংক্রান্ত সুস্পষ্ট তথ্য জানা যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি সেন্সর থেকে এক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত মনিটরিং করা যাবে এবং একেকটি সেন্সরের রেঞ্জ ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

এ কারণে আটটি সেন্সর দিয়ে দেশের বজ্রপাতপ্রবণ বেশির ভাগ অঞ্চলে সতর্কবার্তা দেয়া সম্ভব।

যন্ত্রটি সফলভাবে তথ্য সরবরাহ করতে পারলে অনেকের প্রাণনাশের ঝুঁকি কমলেও এই সতর্কবার্তার ব্যাপারে নাগরিক সচেতনতা বাড়ানো জরুরি বলে জানান মজিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যদি সংকেত পাওয়ার পরও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা না ছাড়ে তাহলে কোনো উদ্যোগই কাজে আসবে না।

এর আগে বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণ করতে সারা দেশে ১০ লাখ তালগাছের চারা রোপণের কর্মসূচি নেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। তালগাছ উঁচু হওয়ায় তা বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে বলে জানা গেছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

 


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কেআই)

সম্পর্কিত খবর