স্ত্রীকে বাজি রেখে জুয়ায় হার, অতপর…

স্ত্রীকে বাজি রেখে জুয়ায় হার, অতপর…

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ভারতের ওড়িশা রাজ্যের এক বাসিন্দা বন্ধুর সঙ্গে জুয়া খেলতে নেমেছিলেন স্ত্রীকে বাজি রেখে। সেই জুয়ায় হেরে যান তিনি। আর খেলার শর্ত হিসেবে স্ত্রীকে তুলে দেন জয়ী ব্যক্তির হাতে। সেই ব্যক্তি পরাজিতের স্ত্রীকে ধর্ষণও করেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনাটি গত সপ্তাহের হলেও সম্প্রতি সামনে এসেছে, যখন স্থানীয় থানা অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে আর তাতে পুলিশ সুপারকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। কিন্তু ততদিনে নির্যাতিতার স্বামী এবং ধর্ষণে অভিযুক্ত দু’জনেই পালিয়েছে।

জানা যায়, ওড়িশার বালেশ্বর জেলার এক নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন যে, তার স্বামী জুয়া খেলায় হেরে গিয়ে তাকে তুলে দিয়েছিল জুয়াতে জয়ী ব্যক্তির কাছে। গ্রামের বাইরে নিয়ে গিয়ে সেই ব্যক্তি ধর্ষণও করে ওই নারীকে, এমনটাই অভিযোগ।

ওই নির্যাতিতা জানান, ‘সেদিন রাত ১১টা নাগাদ স্বামী বাড়িতে ফেরে। বলে তার সঙ্গে যেতে হবে। অত রাতে কোথায় যেতে হবে, বাচ্চারা ঘুমোচ্ছে - এসব বলেছিলাম আমি। কিন্তু স্বামী শোনেনি। কোনো জবাব না দিয়ে এক রকম জোর করেই নিয়ে যায় গ্রামের বাইরে। সেখানে তার এক বন্ধু আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল। ’

ওই নারী বলেন, সেই ব্যক্তি আমার স্বামীর বন্ধু। তাকে আমি ভাই বলে সম্বোধন করি। সে আমার হাত ধরে টানছিল। আমি অনেক মিনতি করেছিলাম। শেষে আমার স্বামীই ওই ব্যক্তির হাতে আমাকে জোর করে তুলে দেয়। তারপর স্বামীর সামনেই আমাকে ধর্ষণ করে ওই ব্যক্তি।

ধর্ষিতা জানান, তিনি তখনও জানতেন না যে, তাকে বাজি ধরে জুয়া খেলতে বসেছিলেন স্বামী এবং তিনি পরাজিত হওয়ায় তাকে ধর্ষণ করা হলো।  

পরের দিন ওই নির্যাতিতার মেয়ে গোটা ঘটনা জানায় তার নানাকে। তৎক্ষণাৎ তিনি মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এসে সবার কাছে ঘটনার সত্যতা জানতে চান। কিন্তু কেউই স্বীকার করেননি।

গ্রামের মাতব্বররাও জানতো না বিষয়টি। শেষে মেয়ে আর তার সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান তার বাবা।

তারপর থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন ওই নির্যাতিতা, সঙ্গে তার বাবাও ছিলেন। কিন্তু অভিযোগ না নিয়ে মিটমাট করে নিতে পরামর্শ দেওয়া হয় তাদের।

বালিয়াপুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামসাগর পান্ডা অবশ্য অভিযোগ না নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি দু’দিন ছুটিতে ছিলাম। ফিরে এসে ঘটনা জানতে পারি। তারপরেই ওই নারীর অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়। তাকে মেডিকেল টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। আর তার স্বামী এবং জুয়া খেলায় জয়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ’

নির্যাতিতার বাবা বলেছেন, ‘পুলিশ সুপারের আদেশের পরেই মামলা নেওয়া হয়েছে। আর তারপরেও এমনভাবে আমার মেয়েকে জেরা করা হচ্ছে, নানা অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা হচ্ছে, যেন মনে হচ্ছে তার স্বামী নয়, আমার মেয়েই অপরাধী। ’

তবে যতদিনে অভিযোগ জমা পড়েছে, ততদিনে নির্যাতিতার স্বামী এবং ধর্ষণকারী দু’জনেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর