হাঁটু ব্যথা উপশমে কিছু করণীয়

সংগৃহীত ছবি

হাঁটু ব্যথা উপশমে কিছু করণীয়

ডা. মো. সাইদুর রহমান

দেহের ওজন বহন করার যে কয়টি জয়েন্ট আছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাঁটু। কেননা, পুরো দেহের ভার বহন করে এটি। শুধু বয়সের কারনে হাঁটুতে  ব্যথা হয় না। যেকোনো বয়সেই হাঁটু ব্যথা হতে পারে।

পুরুষের থেকে নারীরা হাঁটু ব্যথায় ভোগেন বেশি।
দীর্ঘদিন ধরে হাঁটু ব্যথা থাকলে অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে হাঁটু ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিলে ৭০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ ব্যথা দ্রুত ভালো হয়ে যায়।  

কারণ
হাটু ব্যাথার অনেক কারণ রয়েছে।

এর মধ্যে কিছু কারণ খুব সাধারণ। অন্যান্য কারণগুলো হলো :
• হাড় ক্ষয় 
• লিগামেন্ট বা মিনিসকাস ইনজুরি 
• অস্টিও আর্থ্রাইটিস, রিউম্যাটিক আর্থ্রাইটিস, এনকাইলোজিং স্পনডাইলোসিস ইত্যাদি রোগের প্রভাব
• জয়েন্টের মাঝে দূরত্ব কমে যাওয়া
• হাঁটুতে আঘাত 
• বয়সজনিত
• অতিরিক্ত ওজন
• ট্রমা বা দূর্ঘটনা
• ভিটামিন সি, ডি, ক্যালসিয়ামের অভাব ইত্যাদি।

লক্ষণ
• হাঁটু ফুলে যাওয়া
• শক্ত হয়ে যাওয়া
• লাল বর্ণ ধারণ ও গরম অনুভব করা
• হাঁটাচলা বা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে সমস্যা হওয়া
• হাঁটুর শক্তি কমে যাওয়া
• ভাঁজ বা সোজা করতে ব্যথা অনুভব 
• সিঁড়ি বেয়ে উঠতে বা নামতে ব্যথা অনুভব ইত্যাদি।

করণীয়
হাঁটু ব্যথা হলে সেঁক দেয়া যায়, ফিজিওথেরাপি নেয়া যায় বা চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধও সেবন করা যায়।

সেঁক দেওয়া
হাঁটু ব্যথায় বরফ বা গরম পানির সেঁক দিলে উপকার মেলে। কিন্তু কখন কোন প্রক্রিয়ায় প্রয়োগ করতে হবে এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।  
বরফ সেঁক : হাঁটু ব্যথায় বরফ শেক দেয়া যেতে পারে। আঘাতের ফলে হাঁটু ব্যথা হলে প্রাথমিক পর্যায়ে বরফ খুব কার্যকর।
গরম পানির সেঁক : আথ্রাইটিস জনিত কারণে বা দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যথা থাকলে গরম পানির সেঁক দেয়া যেতে পারে।

ফিজিওথেরাপি
একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কিছু সঠিক ব্যায়াম করলে হাঁটু ব্যথা থেকে অনেকাংশে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারা যায়।  

ব্যায়াম
সঠিকভাবে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করলে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে হাঁটুর ব্যথায় উপশম মেলে।  

চিকিৎসা
চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করলে প্রাথমিকভাবে উপকার মেলে। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যথানাশক সেবন করা যাবে না। এতে কিডনির সমস্যা বাড়ে। তবে হাঁটুর ব্যথা খুব বেশি হলে বা দুই জয়েন্টের মাঝে দূরত্ব কমে গেলে সার্জারি বা অপারেশনেরও প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে মিনিসকাস টেনডন বা হাড় ক্ষয় জনিত কারণে কখনো এসব সার্জারির প্রয়োজন হয়।  

লেখক : চেয়ারম্যান
রি-অ্যাকটিভ ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল
শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ এভিনিউ
তেজগাঁও, ঢাকা।

news24bd.tv এআর_কাবুল