‘এতো প্রতিবন্ধকতা থাকলে কে পুঁজিবাজারে আসবে?’

‘এতো প্রতিবন্ধকতা থাকলে কে পুঁজিবাজারে আসবে?’

নিজস্ব প্রতিবেদক

এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এলে উঠে আসে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে প্লেসমেন্ট বাণিজ্যের কথা। বিভিন্ন কোম্পানির প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করে পরে কারসাজিতে জড়িত হতেন তিনি। এবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ফল উৎসবেও উঠে আসে প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর বিষয়টি।

সিএমজেএফের এই ফল উৎসবে আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, প্লেসমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু।

এর মাধ্যমে কিছু মানুষকে ক্যাপিটাল মার্কেটে সম্পৃক্ত করা হয়। এই জায়গাটাকে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু গত ১০-১২ বছরে প্লেসমেন্ট ইস্যুকে খুব বাজেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

শনিবার (২৯ জুন) রাজধানীর পল্টনে সিএমজেএফ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই ফল উৎসবে অংশ নেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী, পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারি, সিইও ফোরামের সভাপতি ছায়েদুর রহমান, ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন,ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল, সিএমজেএফের সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, সিনিয়র সদস্য রাজু আহমেদ প্রমুখ।

ফল উৎসবের সভাপতিত্বে ছিলেন সিএমজেএফের সভাপতি এসএম গোলাম সামদানী। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আবু আলী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

এসময় শাকিল রিজভী বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারের আকার এখনো ছোট। আমরা মনেপ্রাণে চাই বাজার পার্শ্ববর্তী দেশসহ অন্যান্য দেশের মতো বড় হোক। এ জন্য সাংবাদিকদের এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারকে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এর মধ্যে বড় একটি প্রতিবন্ধকতা নগদ টাকা সংগ্রহের সুযোগ না থাকা। এতো প্রতিবন্ধকতা থাকলে কে এখানে আসতে চাইবে? বিনিয়োগকারী লোকসানও করবে আবার নগদ টাকাও তুলতে পারবে না তা হয় না।

সিইও ফোরামের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য প্লেসমেন্ট খুবই ভালো একটি উদ্যোগ ছিল বলে আমি মনে করি। তবে এটা কে কীভাবে ব্যবহার করছে তার ওপর এর ভালোমন্দ নির্ভর করে। তবে এর মন্দ ব্যবহারটা বেশি হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, প্লেসমেন্টটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু। এর মাধ্যমে কিছু মানুষকে ক্যাপিটাল মার্কেটে সম্পৃক্ত করা হয়। এই জায়গাটাকে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তবে সাংবাদিকরা লেখনির মাধ্যমে এই অনিয়মগুলো তুলে ধরলে কিছুটা উত্তরণ হতে পারে। তা নাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, পুঁজিবাজারের নানা অনিয়ম নিয়ে সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় রিপোর্ট করেছেন, করছেন। এরমাধ্যমে অন্যায় বন্ধ হয়ে যাবে তা নয়, তবে কমবে বলে আমরা আশা করি।

তিনি বলেন, ৯-১০ বছর আগে পুঁজিবাজারে এতো বড় বড় প্রতিষ্ঠান না থাকলেও তখন ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা লেনদেন হতো। এতো বছর পরও লেনদেন বাড়েনি, বরং সময়ের পরিক্রমায় লেনদেন ৩০০-৪০০ কোটিতে নেমেছে। গত ১০-১২ বছরে আমাদের অর্জন শূন্য বললেও ভুল হবে। আমরা আসলে ঋণাত্মক অবস্থায় আছি। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের ভূমিকা অস্বীকার করে কোনো অর্থনৈতিক উন্নয়ন অসম্ভব নয় বলেও মনে করেন তিনি।

news24bd.tv/তৌহিদ