আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোটা আন্দোলনের খবর 

সংগৃহীত ছবি

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোটা আন্দোলনের খবর 

অনলাইন ডেস্ক

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় কয়েক শ শিক্ষার্থী আহত হন। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান এ আন্দোলনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকালের সংঘটিত কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অবরোধ কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

দিনব্যাপী সারাদেশে বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি, রয়টার্স ও এপি, আল-জাজিরা, বিবিসি, এনডিটিভিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

মঙ্গলবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি চলমান ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে ‌‘বাংলাদেশে চাকরি কোটা নিয়ে বিক্ষোভে নিহত ৩’ শিরোনামে প্রতিবেদনে বলেছে, লোভনীয় সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর সহিংস সংঘর্ষে বাংলাদেশে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবারের এই সংঘর্ষে আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এর আগে, সোমবার দেশজুড়ে বিক্ষোভ সহিংসতায় আরও ৪০০ জনের বেশি আহত হন।

‘বাংলাদেশে কোটা-বিরোধী সহিংস বিক্ষোভে শিক্ষার্থী নিহত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে কোটাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর নিক্ষেপ করেছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে লাখ লাখ শিক্ষার্থী মঙ্গলবার রাজপথে বিক্ষোভ করছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। কোটাবিরোধী বিক্ষোভকারীরা দেশের প্রধান প্রধান মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন।

মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছে। রাজধানীর ঢাকার কাছের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতভর সহিংসতায় কয়েক ডজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়া উচিত।

বাংলাদেশে চাকরির কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে আহত অন্তত ১০০ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকারপন্থী ছাত্র সংগঠনের সহিংস সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিপেটায় অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছেন।

জানুয়ারিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম উল্লেখযোগ্য বিক্ষোভ। বর্তমানে দেশে বেকারত্বের উচ্চহারের মাঝে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করা মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দেশজুড়ে আন্দোলন করছেন।

এছাড়াও মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসি নিউজ, ভারতের ইকোনমিক টাইমস, সৌদি আরবের আরব নিউজ, ভারতের এনডিটিভি, ব্রিটেনের বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ানসহ বিশ্বের প্রভাবশালী অন্যান্য সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের কোটা-বিরোধী আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় খবর প্রকাশ করেছে।

news24bd.tv/DHL