ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা, শিক্ষার্থীদের ভীড়

সংগৃহীত ছবি

ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা, শিক্ষার্থীদের ভীড়

অনলাইন ডেস্ক

টানা তিন সপ্তাহ বন্ধের পর গতকাল মঙ্গলবার খুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে উঠে গেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে এখন পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা ও কোনো একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। গতকালই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর তালা ভেঙে বিভিন্ন কক্ষে উঠে গেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল থেকে সারা দেশের স্কুল-কলেজ খুললেও উপস্থিতি ছিল খুব কম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় গতকাল থেকে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা এবং হলে বৈধ শিক্ষার্থীদের ওঠানো ও হলগুলোর সেবা কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালু করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর হলগুলোতে ফিরতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন হলে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা যাঁরা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন, তাঁরা হলে চলে এসেছেন। বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কক্ষগুলো এখনো ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। হলে বিদ্যুৎ-পানিসহ জরুরি সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।

আবাসিক হলের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ওঠানোর নতুন নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে ও হোস্টেলে ওঠানো হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা নানা কারণে ছাত্রত্ব নেই, মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করেছে অথবা স্নাতক সম্মান পাস করেছে, কিন্তু নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে মাস্টার্সে ভর্তি হননি—এমন শিক্ষার্থী হলে বা হোস্টেলে উঠতে পারবেন না।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৬ জুলাই মধ্যরাতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে তালা ভেঙে বিভিন্ন কক্ষ দখল নিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা ভারতে যাওয়ার চার ঘণ্টা পর সন্ধ্যার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের তালা ভেঙে বিভিন্ন কক্ষ দখলে নেন।

জানা যায়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ক্যাম্পাসের দিকে রওনা হন। একই সঙ্গে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন নেতাকর্মীও ক্যাম্পাসে আসেন। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী, শাহজালাল, শাহ আমানত, এএফ রহমান ও আলাওল হলের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ধারালো অস্ত্র ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রলীগ এত দিন অন্যায়ভাবে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সিটগুলো দখল করে রেখেছিল। আজ আমরা এর অবসান ঘটালাম। এখন থেকে এই ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্ররাজনীতি চলবে না এবং মেধার ভিত্তিতে আবাসিক হলের সিটগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। শিগগিরই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই দাবিগুলো উত্থাপন করব। ’

news24bd.tv/DHL