মসজিদে পাহারা না লাগলে মন্দিরে কেন, প্রশ্ন শফিকুর রহমানের

জামায়াতের আমীর

মসজিদে পাহারা না লাগলে মন্দিরে কেন, প্রশ্ন শফিকুর রহমানের

অনলাইন ডেস্ক

একটি অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমার বাড়িতে যদি পাহারা না লাগে, আমার মসজিদে যদি পাহারা না লাগে তাহলে হিন্দু বন্ধুদের মন্দিরে কেন পাহারার প্রয়োজন হবে? আমরা এ ধরনের কোনো বৈষম্য চাই না। আমরা চাই আমাদের সন্তানেরা যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে করে গিয়েছে, এর মাধ্যমে সব ধরনের বৈষম্যের কবর রচনা হোক। বাংলাদেশ একটা বৈষম্যবিহীন দেশে পরিণত হোক। ’

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে দিনাজপুর ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে দিনাজপুর উত্তর সাংগঠনিক জেলা আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত রুদ্র সেন, অন্যান্য শহীদ ও আহতদের জন্য সমাবেশ ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমীর বলেন, ‘ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন বিশেষ কোনো গোষ্ঠী, দলের বা সম্প্রদায়ের নয়। এখানে আপামর জনতা রাস্তায় নেমে এসে আন্দোলনকে সফল করেছে। এখানে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের লোকেরা শুধু লড়াই করে নাই, জাতি-দল-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আপামর জনতার এই আন্দোলনকে কেউ যদি নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ তাদের রুখে দেবে। জনগণের সকল আন্দোলনে জামায়াত ইসলামী সঙ্গে থাকবে।

স্বৈরাচার তার শেষ দিনগুলোতে দিশেহারা হয়ে আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে। এই বাংলাদেশ ছোপ ছোপ তাজা রক্তে ভরে উঠেছে। তবে আগে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাড়াকাড়ি-মারামারি হতো, মানুষ যেদিকে চলাফেরা করতে গেলে আতঙ্কে থাকতো। এখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র-ছাত্রীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণও দাঁড়িয়েছেন। ’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার মালাই খাওয়ার উদ্দেশ্য জামায়াতের ইসলামীর নেই। সমাজের একটু গুণগত পরিবর্তন আনা আমাদের উদ্দেশ্য। এমন একটি দেশ ও জগৎ চাই যেই দেশে জাতি-দল-ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। এ দেশের নাগরিক হিসেবে দেশে এবং প্রবাসে যেখানে যাক গর্বের সঙ্গে কথা বলবে। আমার বাড়িতে যদি পাহারা না লাগে, আমার মসজিদে যদি পাহারা না লাগে তাহলে হিন্দু বন্ধুদের মন্দিরে কেন পাহারার প্রয়োজন হবে? আমরা এ ধরনের কোনও বৈষম্য চাই না। আমরা চাই আমাদের সন্তানেরা যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে করে গিয়েছে, এর মাধ্যমে সকল প্রকার বৈষম্যের কবর রচনা হোক। বাংলাদেশ একটা বৈষম্যবিহীন দেশে পরিণত হোক। দুনিয়ার সবাই যেন আমাদের নিয়ে গর্ব করে, এজন্য একটি জাতি গঠন করতে চাই আমরা। যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারের কাছে এসেছি ঋণ পরিশোধ করার জন্য। ’

জামায়াত আমীর বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কোনও মা তার সন্তান হারিয়েছেন, বাবা তার সন্তান হারিয়েছেন, স্ত্রী তার স্বামী হারিয়েছেন, ছোট সন্তানরা তার বাবাকে হারিয়েছেন, ভাই হারিয়েছে বোনকে, বোন হারিয়েছে ভাইকে। ৬৫ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশ ছোপ ছোপ তাজা রক্তে ভরে উঠেছে। আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন বলতে পারে আমাদেরও আবু সাঈদ আছে, আমাদেরও রুদ্র আছে, আমাদেরও মুগ্ধ আছে। আমাদের এরকম হাজারো বীর আছে। আমরা সেই বীরদের অনুসারী। তারা যেন অনুপ্রাণিত হয়। ’

news24bd.tv/আইএএম