পোশাক খাতে অস্থিরতা, ভারত কি সুযোগ নিচ্ছে?

পোশাক খাতে অস্থিরতা, ভারত কি সুযোগ নিচ্ছে?

অনলাইন ডেস্ক

দেশের অন্যতম রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে চলা অস্থিরতায় একদিকে আর্থিক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে, পাশাপাশি দেশি-বিদেশি ক্রেতা হারাচ্ছেন শিল্পমালিকরা। এই অস্থিরতার সুযোগে বিদেশি অর্ডার লুফে নিচ্ছেন ভারতের পোশাক শিল্পমালিকরা। চলমান অস্থিরতায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১০-২০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এমন প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সাপ্তাহিক ‘দ্য ইকোনোমিস্ট’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুলাই ও আগস্টে কোটা ও সরকার পতনের আন্দোলনের জেরে থমকে যায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের চাকা। সরকার পতনের পর সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও অস্থিরতা থামেনি পোশাক খাতে। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ রয়েছে অনেক কারখানা। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে গ্যাস সংকট।

এতে কমেছে উৎপাদন।

ইকোনোমিস্ট জানায়, অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১০-২০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। এই সুযোগ লুফে নিতে মরিয়া প্রতিযোগী দেশগুলো। যার মধ্যে অন্যতম প্রতিবেশী দেশ ভারত। ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ তুলা উৎপাদানকারী দেশ। এসব তুলা তারা বাংলাদেশে রপ্তানি করে। তবে ভারতে অনেক তুলা উৎপন্ন হলেও, তৈরি পোশাক খাতের দিক দিয়ে দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে।
 
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কয়েকটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার কারণে তারা নতুন করে ৫৪ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার পেয়েছে। গত আগস্টে স্প্যানিশ ফ্যাশন ফার্ম জারার কাছ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি অর্ডার পেয়েছে বলে জানিয়েছে আরেকটি গ্রুপ।

তবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে টেক্কা দেওয়ার সক্ষমতা ভারতের নেই বলে জানিয়ে শিল্প বিশ্লেষক মেহেদি মাহবুব দ্য ইকোনোমিস্টকে বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে সেটি শিগগিরই কেটে যাবে। এরইমধ্যে শ্রমিকরা কারখানায় ফিরেছেন এবং উৎপাদন বাড়ছে। এছাড়া পোশাক খাতে যেসব প্রতিযোগী আছে, তাদের চেয়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন দিকে থেকে এগিয়ে আছে। যারমধ্যে অন্যতম হলো কম মজুরিসম্পন্ন শ্রমিক।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ‘সতর্কমূলক আশাবাদী’ অবস্থানে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমনকি বাংলাদেশের পোশাককেই ইউরোপের বাজারগুলো প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

পোশাক শিল্পসংশ্লিষ্ট আরেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে পোশাক শিল্পে পাল্লা দেওয়ার সক্ষমতা এই মুহূর্তে ভারতের নেই। ভারতে ইলেকট্রনিকের মতো মূলধননির্ভর খাতের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পোশাক শিল্পের মতো শ্রমিক নির্ভর খাতে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারতের পোশাক রফতানির মূল্য কমেছে ১৫ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশের বেড়েছে ৬৩ শতাংশ।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক