জয়শ্রী দাস অখিল মাস্টারের প্রায় একশত বিঘার মতো জমি আছে। তিনি নিজ গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তার সংসারে কোন অভাব অভিযোগ না থাকলেও সুখ জিনিসটা নেই। কারণ হিসেবে বলা যায় তাঁর কোন সন্তান এ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। এ পর্যন্ত আটটি সন্তান তার স্ত্রীর গর্ভে থাকা অবস্থায় মারা যায়। নবম সন্তানটি তার স্ত্রীর পেটে আসার সাথে সাথেই মাষ্টার শহরে গিয়ে স্ত্রীকে চিকিৎসা করানো শুরু করলেন। এ সন্তানটি পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হলো। তিন দিন ধরে তিনি গ্রামের সমস্ত লোকের খাবার আয়োজন করল। সন্তান হল, রাতের অন্ধকারে এ সন্তানের মুখ খানি চাঁদের আলোর মত দ্যুতি ছড়াতে লাগলো। মাস্টারের ঘরে যেন সুখ আর ধরে না। তিনি তার মেয়ের নাম রাখলেন অমরাবতী। এবার অমরাবতী কে নিয়ে তাদের সুখে শান্তিতে জীবন অতিবাহিত হতে লাগলো। ধীরে ধীরে অমরাবতী বড় হচ্ছে, একদিন অমরাবতী তার...
সুখতৃপ্ত কঙ্কাল
জয়শ্রী দাস

ফিউরিয়সো
অনুবাদ করেছেন কল্যাণী রমা

আমি একটা বিড়ালকে ভালোবাসতাম। সেটাই আমার দুর্ভাগ্য ছিল। সেই আমার কাল হয়েছিল। আমি একটা ঝোপের মধ্যে ওকে পেয়েছিলাম। কেউ ছেড়ে চলে গেছে। এক অভাগা, ক্ষুধার্ত বিড়ালছানা। ভয় পেয়েছে খুব। ও আমার হাতের ভিতর গুটিসুটি মেরে বসেছিল এক ছোট্ট ক্যাকটাসের মত। গা ভর্তি লোম। ওর ছোট ছোট নখ দিয়ে আমাকে আঁকড়ে ধরেছিল। সাথে সাথে আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম, আর কোন উপায় ছিল না আমার। আমি ওর নাম দিয়েছিলাম ফিউরিয়সো । ওকে নিয়ে গেলাম বাড়িতে। সপ্তাহের পর সপ্তাহ ফিউরিয়সো হাঁটেনি। শুধু গুটিসুটি মেরে বসেছিল। ছোট্ট ক্যাকটাস যেন এক! ও এত লজ্জা পাচ্ছিল নিজের করুণ শরীরের জন্য! ওর এত ক্ষুধার্ত, এত চুপসানো শরীরের জন্য! কিন্তু নিজের দুর্বিষহ অবস্থা কাউকে দেখাতে চাচ্ছিল না ফিউরিয়সো । ছোট্ট এক গর্বিত বিড়ালছানা! ও খাবার হজম করতে পারত না। সাথে সাথে তা বের হয়ে আসত শরীরের সামনের দিক থেকে কিংবা...
রথো রাফির কবিতা
রথো রাফি

রথো রাফি পরিচয় মানুষ প্রথমে নির্ধারণ করে নিজেদের পরিচয়। এরপর ভিন্ন পরিচয়ের মানুষ আবিস্কার আর সৃষ্টি করে চলে তারা! এরপর একদিন ভিন পরিচয় মানুষদের রক্তপান করে আর উল্লাসে মাতে! অথবা নিজেই ভিন পরিচয়ের মানুষের করুণ ও নীল শিকারে পরিণত হয়! মানুষ প্রথমে সীমা নির্ধারণ করে। তারপর সীমা-অতিক্রমকারীকে খোঁজে ও হত্যা করে। কিংবা সীমার বাইরের সেই সীমা ধ্বংস করে আপন ভুগোল গড়ে নিতে চায় এবং সীমার ভেতরের মানুষগুলোকে ধ্বংস করে চলে দিনরাত কিংবা উপহার দেয় বড়জোর অনুগত দাসের জীবন। আর আপন ভুগোল, মানে, শত্রু ভুগোল থেকেই যায়। দুঃখের আর শোকের সুর বেজে চলে পৃথিবীর বুকে। কখনও থামে না। পরিচয় যেনো চেতনাকে স্পষ্টতা দিতে গিয়ে ধ্বংসও করে চলে প্রতিদিন। স্বস্তির দিগন্ত স্রোতের বিপরীতে যাবে অথচ স্রোতের ধাক্কা সইবে না, তা কী করে হয়! অথচ তোমাকে, দেখো, প্রতিটি আঘাত উপহার...
কমলকলি চৌধুরীর একগুচ্ছ কবিতা
কমলকলি চৌধুরী

আকাশ ছোঁয়ার দিন একদিন আমরা আকাশকে ছুঁয়েছিলাম... ছুঁয়েছিলাম অনেক মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে করে। সালাম-বরকত-রফিক-জব্বার-শফিউর যেদিন নক্ষত্রের পানে তাকিয়ে ফাগুনের অযুত কৃষ্ণচূড়ার রং ছড়িয়ে দিয়েছিলেন কালো ক্যানভাসে সেদিন আমরা আকাশকে ছুঁয়েছিলাম... ছুঁয়েছিলাম আমাদের বিদীর্ণ চিত্তের বিশালতায়! বরকতের বিশাল বুকে কী ছিলো সেদিন? বাংলার আদিগন্ত আকাশ? সালামের হৃদয় জুড়ে ছিলো কি পদ্মার উত্তুঙ্গ ঢেউ, পাল-তোলা নৌকো আর দুরন্ত যুবার রাখালিয়া বাঁশির সুর! রফিকের বুকে কি ছিলেন দৃপ্ত রবীন্দ্রনাথ! জব্বারের বিঘত বুকে বিদ্রোহী নজরুল? শফিউরের বুক জুড়ে বুঝিবা জসীম উদ্দীন, জীবনানন্দ? কিংবা কপতাক্ষের কবি? তাঁরা সকলে মিলে সেদিন হয়ে উঠেছিলেন -- আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি... ঘর একটাই ঘর ছিলো, ছিলে জুবুথুবু দুজনে -- সুখেই তো ছিলে! ছিলো ঝগড়াঝাঁটি -- ভালোবাসা -- খুনসুটি।...
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পর্কিত খবর