ডলার সংকটের মধ্যে মে মাসে কমেছে রপ্তানি আয়

মে মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি আয় কম হয়েছে ১৬ শতাংশের বেশি। এই আয় এমন সময় কমেছে, যখন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার চরম সংকট।

ডলার সংকটের মধ্যে মে মাসে কমেছে রপ্তানি আয়

অনলাইন ডেস্ক

মে মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি আয় কম হয়েছে ১৬ শতাংশের বেশি। এই আয় এমন সময় কমেছে, যখন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার চরম সংকট। গতকাল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবির প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ইপিবির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) মে মাসে দেশের সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৪০৭ কোটি ডলার।

এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরে এই আয় ছিল ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। এ ছাড়া মে মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ২৩.৭৫ শতাংশ। ইপিবির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের গত ১১ মাসে (জুলাই-মে) রপ্তানি আয় এসেছে পাঁচ হাজার ১৫৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২.০১ শতাংশ বেশি।

এদিকে তৈরি পোশাক খাত থেকে দেশের বেশির ভাগ রপ্তানি আয় হয়। গত ১১ মাসে এ খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.৮৬ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে চার হাজার ৩৮৫ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল চার হাজার ২৬৩ কোটি ডলার। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাড়লে এই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.৬৩ শতাংশ কম হতো। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার হাজার ৭৪৭ কোটি ডলার।

ইপিবির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রায় সব বড় খাতের রপ্তানি আয় কমেছে। তবে কৃষি পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.২ শতাংশ। আয় হয়েছে ৮৪ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরে একই সময়ে আয় ছিল ৭৮ কোটি ২১ লাখ ডলার।

প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬.৩৯ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ২৪ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। এর আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ১৯ কোটি ডলার। হস্তশিল্প পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯.২৩ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে তিন কোটি ২০ লাখ ডলার। এর আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল দুই কোটি ৮৪ লাখ ডলার।  চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে রপ্তানি আয় কমেছে ১৪.১৭ শতাংশ। আয় হয়েছে ৯৬ কোটি ১৪ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের এই আয় ছিল ১১২ কোটি ডলার। চামড়ার জুতা রপ্তানিতে আয় কমেছে ২৫.৯২ শতাংশ। তবে সব ধরনের পাদুকা রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৮৭ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ৪৬ কোটি ৩৩ লাখ ডলার।  

সরকারের নানা প্রণোদনা ও অগ্রাধিকার খাত হলেও পাট ও পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় কম হয়েছে ৭.৫৩ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ৭৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের আয় ছিল ৮৪ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। হোম টেক্সটাইলে আয় কমেছে ২৪.২৯ শতাংশ। আয় হয়েছে ৭৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ১০২ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। এ ছাড়া আসবাবে রপ্তানি আয় কমেছে ১৮.৫৪ শতাংশ। আয় হয়েছে চার কোটি ৩৮ লাখ ডলার।  খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রপ্তানি ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিকে আরো স্থবির করে ফেলবে।

কেননা এমন এক সময় রপ্তানি আয় কমছে, যখন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার চরম ঘাটতি। একই সময়ে সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং অন্যান্য বৈশ্বিক উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ করছে সরকার।

news24bd.tv/আইএএম