আটকা পড়া সেই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে বাঁচানো যায়নি

আটকা পড়া সেই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে বাঁচানো যায়নি

অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুরে বৃষ্টি ও জলাবদ্ধ ঘরে আটকা পড়েছিলেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাছিমা আক্তার (৩১)। এ সময় তিনি শ্বাসকষ্টে ছটফট করছিলেন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা শনিবার ফরিদগঞ্জের গৃতকালিন্দিয়া গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করেন।  

প্রথমে তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

অবস্থার অবনতি হলে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে শিক্ষার্থীরা নাসিমার মরদেহ ঢাকা থেকে গ্রামে এনে দাফনের ব্যবস্থা করেন। নাছিমার স্বামী জাফর অটোরিকশা চালক ছিলেন।

বর্তমানে অসুস্থতার কারণে চলাফেরা করতে পারেন না। এই দম্পতির ১৪  ও ৭ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

চাঁদপুর পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম জানান, তারা খবর পান ফরিদগঞ্জের গৃতকালিন্দীয়া গ্রামের অসহায় অটোচালক জাফরের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জলাবদ্ধ ঘরে শ্বাসকষ্টে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তখন তারা কয়েকজন মিলে শনিবার দুপুরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদগঞ্জে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে, বিকেলে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

চাঁদপুর সদর হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক নুসরাত জাহান নাছিমার অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ওই নারীকে ঢাকায় পাঠালে, রাত ১০টায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়।

নাসিমার স্বামী জাফর জানান, তার স্ত্রীর হৃদযন্ত্রে ছিদ্র থাকায় শ্বাস নিতে কষ্ট হতো। অনেক আগে একবার ঢাকায় চিকিৎসক দেখিয়েছিলেন। তখন চিকিৎসক সন্তান নিতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু সাত মাস আগে নাসিমা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে, তার শ্বাস কষ্ট বেড়ে যায়। তিনি বলেন, আমি নিজে একজন পঙ্গু মানুষ। লাঠি ভর দিয়ে চলাফেরা করি। টানা বৃষ্টির কারণে বাড়িঘরে হাঁটু সমান পানি। তারই মাঝে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন কী করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এরমধ্যে শিক্ষার্থীরা এসে আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং চিকিৎসার খরচও বহন করেন।

চাঁদপুর ২৫০শয্যা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক নুসরাত জাহান বলেন, সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাসিমার হার্টে ছিদ্র থাকায় শ্বাস নিতে পারছিলেন না। জটিল অবস্থা দেখে দ্রুত ঢাকায় পাঠানো ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। শিক্ষার্থীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছে, কিন্তু ওই নারীকে বাঁচাতে পারেনি।

news24bd.tv/কেআই