'কালরাতে আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত'

'কালরাতে আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত'

অনলাইন ডেস্ক

পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নারী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় এখনো উত্তাল ভারতের রাজপথ। প্রতিবাদে সাধারণ মানুষের সঙ্গে টালিউড, বলিউড তারকারাও।  নারী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় সুবিচার চেয়ে গতকাল রাতে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ের প্রতিবাদী জমায়েতে উপস্থিত হতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। বিক্ষোভের মুখে জমায়েত ত্যাগ করতে বাধ্য হন এই অভিনেত্রী।

এ ঘটনার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। বলেন, বুধবার রাতে আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত।

তিনি বলেন, নিহত চিকিৎসক-পড়ুয়ার জন্য সুবিচার চেয়ে বুধবার রাতে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ের প্রতিবাদী জমায়েতে উপস্থিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এত মানুষের প্রতিবাদ বৃথা যাবে না।

আমিও সুবিচারের আশায় রয়েছি। জমায়েতে যোগ দিয়ে মোমবাতি জ্বালাই। কিন্তু, কিছুক্ষণের মধ্যেই বদলে গেল ছবিটা। আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লাম। আমার উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন অনেকে। চারপাশ থেকে উলুধ্বনি এবং শঙ্খ বাজিয়ে ব্যঙ্গ। এতে কিছু মনে করেছি, এমন নয়। কিন্তু তারপর গাড়িতে জুতো ছোড়া হল। তখন আমি দরজা খুলে বলি আপনারা এমন করবেন না। আপনাদের সঙ্গে কথা বলতেই এসেছি, বসতে এসেছি। কিন্তু কেউ কোনও কথাই শুনলেন না। আসলে আমার মনে হয়, কিছু মানুষ প্রতিবাদের কথা মাথায় না রেখে, হুজুগে চলে গিয়েছিলেন জমায়েতে।

তিনি আরও বলেন, বুঝতে পারছি, সকলেই ক্ষুব্ধ। তবে, কলকাতার প্রতিবাদী চেহারার মধ্যে এই চেহারাটা দেখে আমি লজ্জিত, আহত, কম্পিত। বুধবার রাতে আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত। আমি একজন অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ মানুষ হিসাবে, একজন মহিলা হিসাবে অন্য মহিলার পাশে দাঁড়াতে এসেছিলাম। কিন্তু বিরাট সংখ্যক মত্ত এই ঘটনা ঘটাল। আচমকাই একটা জনস্রোত ধাক্কা দিতে শুরু করল। এত চিৎকার হচ্ছিল যে, কারও কোনও কথা শুনতে পাচ্ছিলাম না। আমি তো কাল কোনও তারকা হিসাবে নয়, মানুষ হিসাবে গিয়েছিলাম। যেখানে ঘটনাটা ঘটল, সেখানে নিহত চিকিৎসকের বাবা-মাও এসেছিলেন। ভেবেছিলাম, একবার দেখা করব ওঁদের সঙ্গে। বলতাম, ওঁদের লড়াইয়ের সঙ্গে আমিও রয়েছি। কিন্তু তা হল কই? তবে এই ঘটনার পর আমি থেমে যাব, এমন নয়। আমার মনের মধ্যে প্রতিবাদ থাকবে। আমিও একই ভাবে সুবিচার চাইব। সেটা থামবে না।

উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট দিবাগত ভোররাত ৩-৬টার মধ্যে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণের পর খুন করা হয় এক তরুণী চিকিৎসককে। ওই তরুণীর গলার একটি হাড় ভাঙা ছিল। তাই প্রাথমিক ধারণা, গলা টিপে হত্যা করা হয় তাকে। শরীরের নানা স্থানে ক্ষত পাওয়া গেছে। এরপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পশ্চিমবঙ্গ।

news24bd.tv/TR   


 

এই রকম আরও টপিক