বংশপরম্পরায় শাসন বা ডাইনেস্টিক রুল ছিল রাজতান্ত্রিক যুগে দুনিয়াজুড়ে একটি শক্তিশালী শাসনব্যবস্থা। যে রাজবংশে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী না থাকত, দুর্বল হয়ে যেত তাদের শাসন। ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র চলত। বিশৃঙ্খলতায় ছেয়ে যেত। প্রাচীন বিশ্বসভ্যতায় যেমন, মধ্যযুগের ইউরোপীয় সভ্যতায়ও রাজবংশীয় শাসন দৃঢ় অবস্থানে ছিল। প্রাচীন ভারতের মৌর্য-গুপ্ত শাসনও ছিল রাজবংশীয় শাসন। বাংলার পাল বংশের রাজারা সফল শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই সাফল্যের সঙ্গে চার শ বছর অতিক্রম করেছিলেন। ভারতের ও বাংলার সুলতানি শাসন ও মোগল শাসনও ছিল রাজবংশীয় বা এক ধরনের পারিবারিক শাসন। পারিবারিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে বড় সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটে। এর বড় উদাহরণ সাত শতকের বাংলার স্বাধীন রাজা শশাঙ্কর শাসনামল। শশাঙ্ক যদি রাজবংশ গড়তে পারতেন তাহলে বলা যায় ভারতবর্ষের ইতিহাস ভিন্নভাবে লিখতে...
রাজনীতিতে উত্তরাধিকার তৈরি করা সহজ হবে না
এ কে এম শাহনাওয়াজ, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
এ কে এম শাহনাওয়াজ
জুলাই বিপ্লবের ভবিষ্যৎ কি আমাদের ধোঁকা দিচ্ছে
সাবাহ কানেতা তারিক, দ্বিতীয় বর্ষ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলি বা ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান বলি, এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল সর্বোচ্চ। নিম্ন মাধ্যমিক থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষার্থীসবাই এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে তারা অদম্য সাহসের পরিচয় দিয়েছে, তা কি পূরণ হওয়ার পথে যাচ্ছে? যে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এতগুলো জীবন বিসর্জন দেওয়া হলো, সেই ফ্যাসিবাদ থেকে কি আমরা আসলে রেহাই পেয়েছি? নাকি আমরা আবারও সনাতন রাজনীতির বেড়াজালে ধরা পড়তে চলেছি? এমন অনেক প্রশ্ন বর্তমানে আমার মতো শিক্ষার্থীদের মনে জাগছে। ১৫ জুলাই রাতে যখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে এসেছিল, যখন জীবন হাতে নিয়ে মাঠে ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরমে আমরা যুদ্ধ করছিলাম, তখন আসলে আমরা কেমন বাংলাদেশের আশা করেছিলাম? এখানে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা...
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান : প্রতিবাদ, প্রতিবন্ধকতা ও প্রত্যাশা
মেরাজ আহমেদ খান
একুশ শতকে বাংলাদেশে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান (২০২৪) একটি মাইলফলক। চাকরিক্ষেত্রে কোটা সুবিধার যৌক্তিক সংস্কার, রাজনৈতিক অধিকার বাস্তবায়ন, বাকস্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং পরিশেষে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে চলা স্বৈরশাসনের অবসান ঘটানোর জন্য ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের কথা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এতগুলো পরিবর্তন একসঙ্গে আনার জন্য রক্তক্ষরণ, অঙ্গহানি, সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানিও কম হয়নি। সরকারি হিসাব মোতাবেক আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা হাজারের কম হলেও প্রকৃতপক্ষে তা হাজারেরও ওপরে। আমাদের এই গণ-অভ্যুত্থান দাঁড়িয়ে আছে দুটি সাফল্য নিয়ে। প্রথমটি হলো গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অত্যাচারী ও আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত একটি সরকারের পতন হয়েছে। অন্য সফলতাটি হচ্ছে, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষ সামাজিক বিষণ্নতা কাটিয়ে একটি নতুন সম্ভাবনার স্বপ্ন...
অর্থ ও ক্ষমতার দাপট: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ
আব্দুল বায়েস
এক. মূলত যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি-পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশের আনুক্রমিক সরকারগুলো অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, তার নাম ইনভারটেড ইউ বা কুজনেটস হাইপোথেসিস। নোবেলজয়ী সাইমন কুজনেটের তত্ত্ব অনুযায়ী, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল প্রথম দিকে বৈষম্য সৃষ্টি করে; কারণ যারা পুঁজিপ্রবাহ ঘটায় তারা অধিকতর লাভবান হয়। কিন্তু ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধির প্রভাব একসময় দরিদ্রের ডেরায় চুইয়ে পড়ার ফলে বৈষম্য কমতে থাকে। সুতরাং প্রথমে প্রবৃদ্ধি, তারপর বিতরণের বিতর্ক। সন্দেহ নেই যে এই বটিকা সেবনে বাংলাদেশে বিশেষত গেল দেড় দশকে যেমন ঈর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে, তেমনি বেড়েছে নিন্দনীয় আয়বৈষম্য। বর্তমান বাংলাদেশে আয়বৈষম্য মাপার মাধ্যম গিনি সহগ প্রায় ৫-এ পৌঁছে বিপত্সীমার কাছাকাছি বলা চলে। অন্যদিকে সময়ের আবর্তনে সম্পদের অকল্পনীয় বৈষম্যের পিঠে সওয়ার বাংলাদেশ। সুতরাং...
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পর্কিত খবর