মুখে দুর্গন্ধের কারণে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। দিনে দুবার ব্রাশ করার পরও দুর্গন্ধ যেন যেতে চায় না, তখন মুখ ঢেকে কথা বলা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।
মুখে খারাপ গন্ধ বা হ্যালিটোসিস, একটি অস্বস্তিকর সমস্যা। এটি মুখের ভেতর ব্যাকটেরিয়া তৈরি হওয়ার কারণে হয়। যা দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস তৈরি করে। কিছু ক্ষেত্রে এটি মাড়ির রোগ বা দাঁত ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। কিন্তু এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার মুখের গন্ধ সতেজ করা সম্ভব।
আসুন জেনে নেই উপায়-
* মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করা:
গরম পানি বা লবণ পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়ক হয় এবং মুখের গন্ধ সতেজ হয়। আপনি যদি ভালো পরিষ্কার চাইলে, মাউথওয়াশও ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন দুইবার এটি করুন এবং স্থায়ী উপশম পাবেন।
আরও পড়ুন
ঘাড়ে ব্যথা হলে কী করবেন?
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
* জিহ্বা স্ক্র্যাপ করা:
জিহ্বাতে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া জমে থাকতে পারে, যা খারাপ মুখ গন্ধের কারণ হতে পারে। জিহ্বার এই ব্যাকটেরিয়া দূর করতে প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার পর জিহ্বা স্ক্র্যাপার ব্যবহার করুন। এটি মুখের গন্ধ দূর করার জন্য একটি সহজ কিন্তু কার্যকরী পদ্ধতি।
* দারুচিনি, মৌরি বা আনিস বীজ গ্রহণ:
প্রচলিতভাবে, ফেনেল এবং আনিস বীজ মুখের গন্ধ সতেজ করতে ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি খাবারের পর, বিশেষত ডিনারের পর, ভাজা ফেনেল বীজ চিবানোর চেষ্টা করুন। এগুলিতে এমন সুগন্ধি তেল থাকে যা প্রাকৃতিকভাবে খারাপ গন্ধ দূর করে। ফেনেল এবং আনিস বীজ সাধারণ, ভাজা বা চিনির আবরণযুক্তভাবে খেতে পারেন।
* লবঙ্গ চিবানো:
লবঙ্গ মৌখিক স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত সহায়ক এবং এটি খারাপ গন্ধ দূর করতে কার্যকর। দিনে কয়েকবার লবঙ্গ চুষুন বা চিবান।
* চুইংগাম চিবানো”
গাম চিবানো খারাপ মুখ গন্ধ দূর করার একটি সহজ এবং কার্যকরী পদ্ধতি। চিবানোর মাধ্যমে স্যালিভা উৎপাদিত হয়, যা প্রাকৃতিকভাবে মুখের গন্ধ দূর করে। অতিরিক্ত চিনি এড়াতে চিনিহীন গাম বেছে নিন।
আরও পড়ুন
পা ফোলা কিসের লক্ষণ?
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
* তেল টানার চেষ্টা করা:
তেল টানার প্রাচীন একটি আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি, যেখানে আপনি ১০-২০ মিনিট ধরে মুখে তেল (সাধারণত নারকেল তেল) ঘোরান। এটি ব্যাকটেরিয়া এবং প্লাক দূর করতে সহায়তা করে, মুখের গন্ধ সতেজ করে এবং ভালো মৌখিক স্বাস্থ্য বজায় রাখে। এটি ক্যাভিটি প্রতিরোধেও সহায়ক।
* অধিক পানি পান করা:
মুখ শুকিয়ে গেলে খারাপ গন্ধ হতে পারে। সুতরাং, সারা দিন পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। এতে মুখ আর্দ্র থাকে এবং স্যালিভার উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, যা খারাপ গন্ধ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।
* সিট্রাস ফল খান:
লেবু এবং কমলা জাতীয় সিট্রাস ফলগুলি মৌখিক স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর। এগুলি স্যালিভার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে, যা প্রাকৃতিকভাবে খারাপ গন্ধ দূর করে। তাদের সতেজ স্বাদও মুখের গন্ধ দূর করার একটি প্রাকৃতিক উপায়।
আরও পড়ুন
হার্ট ড্যামেজ হচ্ছে কিনা জেনে নিন
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
* ব্ল্যাক চা পান করা:
কালো চা খারাপ মুখ গন্ধ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এতে থাকা পলিফেনলস মুখে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমিয়ে, অস্বস্তিকর গন্ধ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
* লবণ-পানির গার্গল করা:
হালকা গরম লবণ-পানি দিয়ে গার্গল করলে তা মুখের খারাপ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে পারে এবং আপনার মুখের গন্ধকে সতেজ করে তুলতে পারে। লবণ-পানি মুখের মধ্যে গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে দূরে করে। আপনাকে এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ লবণ মেশাতে হবে এবং বাইরে যাওয়ার আগে এটি দিয়ে গার্গল করতে হবে।
আরও পড়ুন
যে খাবার খেলে হতে পারে ‘ক্যান্সার’
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
* পুদিনাপাতা:
একে প্রাকৃতিক মাউন্ট ফ্রেশনার বলা যেতে পারে। তাই মুখে গন্ধ হলে ২-৩টি পুদিনাপাতা নিয়ে চিবিয়ে ফেলুন।
এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলি আপনার দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করলে আপনি সতেজ মুখের গন্ধ পাবেন এবং মৌখিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারবেন। একটি স্বাস্থ্যকর এবং আত্মবিশ্বাসী হাসির জন্য এই পদ্ধতিগুলি চেষ্টা করুন।
news24bd.tv/NS