রমজান এক গভীর আধ্যাত্মিক মাস, যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন আচার ও রীতি-নীতি পালন করার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। আজকের প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রমজান মাস উদযাপনের অনন্য ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপর। মধ্যপ্রাচ্যের রমজান ঐতিহ্য ১. মিসর : ফানুস উত্সব : মিসরের রমজান অত্যন্ত জনপ্রিয়, বিশেষ করে ফানুস উৎসবের জন্য। এটি বহু শতাব্দী ধরে রমজানের অন্যতম চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মিসরের মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, দোকান এবং রাস্তাঘাট ফানুস দিয়ে সাজায়, যা রমজানের শুভ্রতা ও আনন্দের প্রতীক। বিশেষ করে মিশরের রাজধানী কায়রোতে রমজান মাসের শুরুর দিকে ঐতিহ্যবাহী রঙিন ফানুসের মেলা বসে। ২. সৌদি আরব : মসজিদভিত্তিক ইফতার ও ঐতিহ্যবাহী খাবার : সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনার পবিত্র মসজিদগুলোতে রমজান মাসে ইফতার একটি বিশেষ সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। হাজার হাজার মুসল্লি...
দেশে দেশে রমজান-সংস্কৃতি
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাহরি খাওয়া সম্পর্কিত কিছু মাসআলা
মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ

রোজাদারের জন্য রাতের শেষাংশে সুবহে সাদিকের আগে আগেই সাহরি খাওয়া সুন্নত। অর্ধ রাতের পর যে সময়ই সাহরি খাবেসাহরির সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু রাতের শেষাংশে সাহরি খাওয়া উত্তম। যদি মুয়াজ্জিন সময় হওয়ার আগে ফজরের আজান দিয়ে দেন, তাহলে সাহরি খাওয়া নিষিদ্ধ নয়যতক্ষণ সুবহে সাদিক না হয়, ততক্ষণ খেতে পারবে। সাহরি খাওয়ার পর রোজার নিয়ত অন্তরে করাই যথেষ্ট। মুখে নিয়ত উচ্চারণ করা জরুরি নয়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ : ১/৩৮১) সাহরি ও ইফতারের জন্য দফ বাজানো যেভাবে বিবাহ ও যুদ্ধের ঘোষণার জন্য দফ বাজানোর কথা বিভিন্ন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, তেমনি চাঁদ দেখা এবং সাহরি ও ইফতারের সময় প্রয়োজনে ঘোষণার উদ্দেশ্যে দফ বাজানো জায়েজ। তবে শর্ত হচ্ছে, প্রচলিত বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে যেন না হয়। (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া: ৩/৪০, শামি : ৫/৩০৭) সাহরি খাওয়ার সুন্নত আদায়ে পান খাওয়া সাহরি খাওয়া সুন্নত। যদি...
মেহদির রঙে রঙিন রোজা
আলেমা হাবিবা আক্তার

বিশ্বজুড়ে বিচিত্র রীতি ও সংস্কৃতিতে উদযাপিত হয় পবিত্র রমজান। এসব রীতি ও সংস্কৃতির সবগুলোর উত্স কোরআন ও হাদিস নয়, তবুও যুগ যুগ ধরে স্থানীয়রা গুরুত্বের সঙ্গে তা পালন করে আসছে। রমজানকেন্দ্রিক এমন একটি ঐতিহ্য হলো প্রথম রোজার সময় মেয়েদের হাতে মেহদি দেওয়া। সৌদি আরবের উত্তর সীমান্তবর্তী অঞ্চলের রীতি হলো কোনো মেয়ে যখন প্রথম রোজা রাখে তাদের হাতে মেহদি দেওয়া হয়। মেয়ের হাতে মেহদি দিতে পরিবারের সদস্যরা একত্র হয় এবং তারা তার হাতে বাহারি নকশায় মেহেদি এঁকে দেয়। মেহদি দিয়ে তারা তরুণীকে রোজা রাখতে উত্সাহিত করে এবং জীবনের প্রথম রোজাকে স্মরণীয় করে রাখতে চায়। উত্সবমুখর পরিবেশে আঁকা মেহদির নকশা তরুণীর গর্ব ও উত্সাহ বাড়িয়ে দেয়। তারা তাদের নকশাআঁকা হাত অন্য দেখায়। এর মাধ্যমে সমাজে রমজানের চেতনাই সুদৃঢ় হয়। ওয়াজদান আল আনজি সৌদি আরবের আরার অঞ্চলের বাসিন্দা। তিনি...
রোজার সামাজিক গুরুত্ব
ড. মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম

রোজা ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান। ইবাদত ও আমলের পাশাপাশি এর আছে সামাজিক গুরুত্ব। নিম্নে রোজার সামাজিক গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হলো ১. আদর্শ সমাজ গঠন : আদর্শ সমাজ ও জাতি গঠনের উদ্দেশ্যে রোজা তার মহান শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর একবার করে বাধ্যতামূলক আগমন করে। ইসলাম প্রকৃতপক্ষে এই অতুলনীয় নিয়মটির প্রবর্তন করে অফুরন্ত্মপুন্য ও অমূল্য ফলদানকারী একটি চিরহরিত্ বৃক্ষরোপণ করেছে। এর ফলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আদর্শ নতুন সমাজ গড়ে উঠে। ২. সদ্ব্যবহারের শিক্ষা : রমজান মাস পরসপর সহানুভূতি ও সদ্ব্যবহারের মাস। এ মাস সমাজে খেটে খাওয়া মানুষের প্রতি সদ্ব্যবহারের শিক্ষা দেয়। মহানবী (সা.) বলেন, এ মাসে যারা দাস-দাসীদের কাজের বোঝা হালকা করে দেয়, আল্লাহ পাক তাদের ক্ষমা করে দিবেন এবং দোজখের আগুন থেকে নাজাত দান করবেন। ৩. বিপ্লবী শিক্ষা : রোজার সাহরি ও ইফতার হালাল রুজি...