নদীতে বাড়ছে পানি, যমুনা পাড়ে ভাঙন আতঙ্ক

যমুনা নদীর পাড়

নদীতে বাড়ছে পানি, যমুনা পাড়ে ভাঙন আতঙ্ক

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। এতে করে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকায় শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙন। বিগত ভাঙনের পর যেটুকু সম্বল অবশিষ্ট ছিল, সেটিও ভাঙনের আশঙ্কায় চরম হতাশায় দিন পার করছেন নদীপাড়ের শতশত ভাঙনকবলিত মানুষ। ইতোমধ্যে কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, চিতুলিয়াপাড়া, ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া ও নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা, পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ী এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় কয়েক দিন ধরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষগুলো।

নদীপাড়ের মানুষের অভিযোগ, গত বছর ভাঙনরোধে খানুরবাড়ী, চিতুলিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে নামমাত্র নিম্নমানের জিও ব্যাগ ফেলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেগুলো এখন ধসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রভাব খাটিয়ে নিজ নিজ বাড়ির সামনে জিওব্যাগ ফেলে। দরিদ্র পরিবারের বাড়ির সামনে জিওব্যাগ ফেলা হয় না।  

গত বছর ভাঙনের শিকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, শুকনো মৌসুমে বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে নদীতে জেগে ওঠা চর কেটে ট্রাকে বিক্রি করে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায় না। এ কারণে নদীতে পানি আসলে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়।

গত বছর বন্যায় ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা গাইড বাঁধের জিওব্যাগ আনলোড ড্রেজারগুলোর কারণে ধসে যাচ্ছে। এর ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ও আধ-পাকা সড়ক, গাইড বাঁধ বসতভিটা, মসজিদ-মন্দির, ছোট-বড় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।

পাটিতাপাড়ার ওমেছা, সুফিয়া ও কোরবান আলী বলেন, যমুনা নদীতে গত কয়েকদিন ধরে পানি বাড়ছে। এতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। কিন্তু ভাঙনরোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। গত বছর বসতভিটা ভেঙে যেটুকু থাকার জায়গা ছিল সেটি এবারও চোখের সামনে নদী গর্ভে বিলীনের পথে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুর রশীদ বলেন, কিছুদিন ধরে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। কিন্তু ভাঙনের বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। ভাঙনরোধে ঊর্ধ্বতন দপ্তরে অবগত করাসহ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলব এবং ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভূঞাপুরে ভাঙনের বিষয়টি ইউএনও’র মাধ্যমে জানতে পারলাম। ভাঙন এলাকাগুলোর মধ্যে গোবিন্দাসী ও নিকরাইলের জন্য একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকার ইকোনোমিক জোনের কাজ শুরু হলে স্থায়ী বাঁধ হয়ে যাবে।  
news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক