আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির ঋণ অনুমোদন

বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএমএফ

আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির ঋণ অনুমোদন

অনলাইন ডেস্ক

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের তৃতীয় কিস্তি অনুমোদন করেছে। তৃতীয় কিস্তিতে বাংলাদেশ পাবে ১ দশমিক ১১ বিলিয়ন বা ১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। সোমবার (২৪ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী দুই দিনের মধ্যে বাংলাদেশের রিজার্ভে এ অর্থ যোগ হবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।

মেজবাউল হক বলেন, ‘আইএমএফের নির্বাহী সদস্যদের বৈঠকে ঋণ অনুমোদন হয়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে এই ঋণের অর্থ রিজার্ভে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। আজকে পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ আছে ২৪ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের ঋণ যুক্ত হলে তা বেড়ে প্রায় ২৬ বিলিয়নের কাছাকাছি হবে।

বিদেশি ঋণগুলো আশা শুরু হওয়া দেশের বিদেশি রিজার্ভে ক্ষয় কমবে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই শীর্ষ কর্তা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে আজ সোমবার পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। যদিও এই হিসাবটি গ্রহণ করে না আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিপিএম ৬ অনুযায়ী দেশের গ্রস রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।

ঋণের কিস্তির শর্ত অনুযায়ী, আইএমএফকে দেশের রিজার্ভের নিট হিসাব দিতে হয়। অর্থাৎ বিপিএম-৬ থেকে চলতি দায় বাদ দিলে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়ায় সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলারেরও কম। তবে আইএমএফের ঋণের ১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার রিজার্ভে যুক্ত হলে নিট রিজার্ভ সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভে লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার রাখার কথা রয়েছে।

এর আগে ২৪ এপ্রিল ঋণ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় কিস্তির জন্য গত ডিসেম্বরভিত্তিক শর্ত বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণে আসে আইএমএফ মিশন।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার মধ্যে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর তিন দিন পর প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার  ছাড় করে সংস্থাটি। এর পর গত ১৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হয়। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু  রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তাবয়ন ও আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।  

এ ঋণের একটি অংশ জলবায়ু তহবিলের, যা বাংলাদেশকেই প্রথম দেওয়া হয়েছে। তাই এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকুক, তা চায় আইএমএফ। এ জন্য বাংলাদেশের অনুরোধে চতুর্থ কিস্তির জন্য আগামী জুন শেষে নিট রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশশিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেক শর্ত পূরণ করার পথে থাকলেও ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর থেকে রিজার্ভের ত্রৈমাসিক কোনো লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। সরকারের অনুরোধে আইএমএফ পরে সংশোধন করে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেয়।

news24bd.tv/আইএএম