বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহারের একদফা দাবি

সংগৃহীত ছবি

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহারের একদফা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অলাভজনক দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর আরোপিত সকল প্রকার ভ্যাট এবং ট্যাক্স প্রত্যাহারের একদফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাজপথে নিঃস্বার্থভাবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। অথচ আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি খাতে রয়েছে ব্যাপক বৈষম্য।

এক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চলে আমাদের ট্যাক্সের টাকায়, অন্যদিকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার আদায় করে ভ্যাট ও নানা প্রকার ট্যাক্স।

এতে আরও বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি গবেষণা কাজের জন্য সরকারিভাবে অর্থায়ন করা হয়। আমাদের দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এই ব্যবস্থা প্রচলিত। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অর্থায়ন করা তো দূরে থাক, উপরন্তু ১৫% ট্যাক্স আদায় করা হয়।

একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্রয় ক্ষেত্রে ৫% ভ্যাটসহ ২% থেকে ৭% বিক্রয় কর এবং অনেক কষ্টে সঞ্চিত অর্থ থেকে আরও ১৫% আয়কর আদায় করার ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়।

বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি মনে করে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বর্তমানে কর্তনকৃত ট্যাক্সের সমপরিমাণ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন কাজে সরকারি অনুদান হিসাবে বরাদ্দ দেয়া হলে চলমান বৈষম্য কিছুটা হলেও কমবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় একটি অলাভজনক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কোনপ্রকার সরকারি সহায়তা ব্যতিরেকে কেবলমাত্র শিক্ষার্থী ফিস থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার বিশাল ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত অর্থ যা থাকে তা বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলে জমা করা হয় এবং ক্যাম্পাস নির্মাণ/বর্ধিতকরণ, ল্যাব লাইব্রেরির উন্নয়ন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কাজে ব্যবহার করা হয়।

সঞ্চিত তহবিল থেকে সরকার যখন ১৫% ট্যাক্স কেটে নিয়ে যায়, তখন আমাদের গবেষণার তহবিলও ১৫% কমে, ১০০% থেকে ৮৫% এ নেমে আসে। দেশ ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে গবেষণা কাজের বিকল্প নেই। আমাদের দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা কাজ করে প্রচুর অর্থ নিয়ে যাচ্ছে অথচ আমরা বেকার রয়ে যাচ্ছি। আমরা পিএইচডি ও গবেষণা করতে বিদেশ যাই, অন্য দেশ যেখানে আমাদেরকে গবেষণা কাজে স্কলারশিপ দেয়, গবেষণার ফলাফল তাদের দেশের উন্নয়নে কাজে লাগায়, সেখানে আমাদের সরকার গবেষণার অর্থ ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ কেটে নিয়ে যায়।

বৈষম্যের শিকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ অতীতে ভ্যাট ও ট্যাক্স রহিত করণে আইনি পদক্ষেপ ও আন্দোলনে সফলতা লাভ করলেও চলতি বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পুনরায় ট্যাক্স আরোপ করে। ট্যাক্স বিষয়ে কোনরূপ আলোচনা ব্যতিরেকে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ব্যাংক তহবিল থেকে অর্থ তুলে নেয়, এমন কি গত ঈদ উৎসবের পূর্বে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্ট দীর্ঘসময় জব্দ করে রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ব্যয় নির্বাহ এবং শিক্ষক, কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা প্রদান বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অমানবিক ঘটনার সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আরোপিত সকল প্রকার ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রত্যাহারের একদফা দাবি জানাচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ ও বৈষম্য দূর করার ন্যায়সঙ্গত দাবি প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট সকলের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।

news24bd.tv/FA