টালিউডের পাশাপাশি আরজি করকাণ্ডে সরব বলিউড তারকারা

টালিউডের পাশাপাশি আরজি করকাণ্ডে সরব বলিউড তারকারা

অনলাইন ডেস্ক

পশ্চিমবঙ্গে আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করার এ ঘটনার কয়েকদিন ধরেই উত্তাল গোটা ভারত। ভারতের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সরব হয়েছেন কোলকাতার তারকারা। আরজি করকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বলিউডের তারকারাও। বিজেপির সংসদ সদস্য কঙ্গনা রানাউত থেকে শুরু করে কারিনা কাপুর, হৃত্বিক রোশান, আলিয়ারা একজোট হয়ে কী বলছেন?

কারিনা কাপুর
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ন্যায়বিচার চেয়েছেন বলি তারকাদের অনেকেই।

কারিনা কাপুর সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, "১২ বছর সেই একই ঘটনা, সেই একই প্রতিবাদ। কিন্তু তাও আমরা বদলের অপেক্ষা করছি। "

প্রীতি জিনতা
প্রীতি জিনতা ইন্সট্রাগামে লিখেছেন, ‘অর্থনীতিতে সারাবিশ্বে আমাদের দেশ পঞ্চম স্থানে রয়েছে। আগামী নির্বাচনে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ছাপিয়ে যাবেন নারীরা— এমনই মনে করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সময় হয়েছে যে, নারীর নিরাপত্তাকেই সবার আগে রাখতে হবে। খারাপ লাগে যখন দেখি, গ্রেফতারের পর একজন ধর্ষকের মুখ ঢাকা থাকে। কিন্তু নির্যাতিতার ছবি ও নাম সব প্রকাশ্যে আনা হয়। ’ 

হৃত্বিক রোশন
হৃত্বিক রোশন তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "সমাজ হিসেবে আমাদের এবার বদলাতে হবে যাতে সবাই সেখানে নিরাপদ অনুভব করেন। কিন্তু এতে বহু সময় লেগে যাচ্ছে। আমাদের ছেলে মেয়েদের সঠিকভাবে মানুষ করলেই আশা করছি এই বদল আসবে। আমরা ঠিক পারব। কিন্তু এখন আপাতত এই ঘটনার দ্রুত বিচার চাই। আর সেই শাস্তি এতটাই কঠিন এবং দৃষ্টান্তমূলক হয়ে হবে যাতে অপরাধীরা আর এই কাজ করার কথা না ভাবে। আমি নির্যাতিতার পরিবারের পাশে রইলাম, ওঁদের মেয়ের ন্যায় বিচার চাই। "

আয়ুষ্মান খুরানা
আয়ুষ্মান খুরানা তাঁর লেখা কবিতা পাঠ করে বলেন, "আমি যদি ছেলে হতাম, তবে আমিও দরজায় ছিটকিনি না দিয়ে ঘুমোতে পারতাম। আমি যদি ছেলে হতাম, তাহলে ঘুরে বেড়াতাম সারা রাত। সকলের মুখে শোনা যায়, মেয়েকে পড়াশোনা করিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। আজ যদি চিকিৎসক না হতাম, তবে এভাবে মাকে চোখের জল হয়তো ফেলতে হত না। ৩৬ ঘণ্টা ধরে ধর্ষণ, পুরুষদের লালসার স্বীকার হলাম। যদি ওই পুরুষগুলোর মধ্যে ন্যূনতম নারীসত্তা থাকত। ভাবছি যদি আমি ছেলে হতাম, তা হলে বেঁচে থাকতাম। "

আলিয়া ভাট
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে আলিয়া ভাট লেখেন, "আরও একটা ধর্ষণ, বুঝলাম মেয়েরা কোথাও সুরক্ষিত নয়। এক দশক আগে নির্ভয়াকাণ্ড নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। আবার একই ঘটনা, কিছুই বদলায়নি। আমরা কীভাবে আমাদের কর্মস্থলে যাব? এই চিন্তা মাথায় ঘুরছে। এই ঘটনা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নারীদের সুরক্ষা আসলে তাদের নিজেদের হাতেই তুলে নিতে হবে। "

আনুশকা
আরজি করের ঘটনার বিচার চেয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা। প্রশ্ন ছুঁড়ে তিনি লিখেছেন, "এবার আপনার অজুহাত কী হবে? এবারও কী তার দোষ? কারণ পুরুষরা তো পুরুষ হবে, তাই না?"

সোনাক্ষী সিনহা
এই ঘটনায় সোনাক্ষী সিনহা বলেন, "আর জি কর মেডিকেল কলেজের এই ঘটনাটি এখন আর শুধু ডাক্তারদের সমস্যা নয়। একবার ভাবুন, একটা নারী যদি নিজের কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ না থাকেন, তাহলে এর শেষ কোথায়? কিছু নেতারা বলেছিলেন, মেয়েদের রাতে বেরনো উচিত নয়। কিন্তু সেই মেয়েটির যদি নাইট ডিউটি থাকে, তাহলে? সে কি সেখানেও নিরাপদ? এই ঘটনা যে কোনও কোনও সময়ে যে কারও ক্ষেত্রে যে কোনও জায়গায় ঘটতে পারে। এই মানসিক বিকারগ্রস্ত অপরাধীকে কঠোরতম শাস্তি দিয়ে প্রকৃত উদাহরণ তৈরি করুন। "

টুইঙ্কল খান্না

আরজি করকাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিনেত্রী টুইঙ্কল খান্না লিখেছেন, ‘পঞ্চাশটা বছর এই পৃথিবীতে, এই দেশে কাটিয়ে ফেললাম। আমি আমার মেয়েকে ঠিক সেগুলোই শেখাচ্ছি, যেগুলো আমিও ছোটবেলায় শিখেছি। একা পার্কে যেও না, স্কুলে যেও না, সমুদ্রের ধারেকাছেও যেও না। একা কোনো পুরুষের সঙ্গে কোথাও যেও না। তিনি যদি তোমার কাকু, ভাইয়ের বন্ধুও হয়, তবুও না। সকাল-সন্ধ্যা কখনো একা কোথাও যেও না। বিশেষ করে রাতে তো একদমই না। কখন যাবে, এটার চেয়েও বড় বিষয় হলো একা যদি তুমি কোথাও যাও, ফিরে না-ও আসতে পারো। ’ 

বলিউডের তরুণ প্রজন্মের তারকারাও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সুহানা খান, নব্যা নভেলি নন্দা দাবি জানান, স্কুল, কলেজ এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের সঠিক নিরাপত্তা দিতে হবে।

এদিকে টালিউড অভিনেতা ও বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষকে আটক করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। আর জি করকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজপথে নামায় তাকে আটক করা হয়। আর জি করকাণ্ডে টালিউড অভিনেত্রী রচনা বন্দোপাধ্যায় থেকে শুরু করা শুভশ্রী, শ্রীলেখাসহ বহু তারকা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট দিবাগত ভোররাত ৩-৬টার মধ্যে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণের পর খুন করা হয় এক তরুণী চিকিৎসককে। ওই তরুণীর গলার একটি হাড় ভাঙা ছিল। তাই প্রাথমিক ধারণা, গলা টিপে হত্যা করা হয় তাকে। শরীরের নানা স্থানে ক্ষত পাওয়া গেছে। এরপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পশ্চিমবঙ্গ।  

news24bd.tv/TR