২ হাজার ৬৬টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি

ফাইল ছবি

দেশব্যাপী যৌথ বাহিনীর অভিযান

২ হাজার ৬৬টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি

অনলাইন ডেস্ক

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সারা দেশের বিভিন্ন থানা থেকে ৫ হাজার ৮২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে বা খোয়া গেছে। এসব আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে যৌথ বাহিনী।

অভিযানে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের ৩ হাজার ৭৬৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। বাকি ২ হাজার ৬৬টি অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি।

এমন পরিস্থিতিতে বুধবার (আজ) থেকে অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করবে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অভিযানকেন্দ্রিক সমন্বয় সভা হয়। এ ছাড়া পৃথকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করেন। সেখানে অভিযানকেন্দ্রিক কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

এছাড়া অস্ত্র উদ্ধারে মহানগর ও জেলায় আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে।  

পুলিশ সদরদপ্তর জানিয়েছে, থানা ও ফাঁড়ি থেকে সব মিলিয়ে পুলিশের ৫ হাজার ৮২৯টি অস্ত্র এবং ৬ লাখ ৬ হাজার ৭৪২ রাউন্ড গুলি লুট হয়েছে। এছাড়া ৩১ হাজার ৪৪ রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল, ৪ হাজার ৬৯২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড লুণ্ঠিত হয়েছে। লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ৭.৬২ বোরের রাইফেল রয়েছে ১ হাজার ১৪৭টি। ৭.৬২ বোরের পিস্তল ১ হাজার ৫৫৬টি।  

পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক গতকাল জানান, লুট হওয়া সব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে শুরু হওয়া যৌথ অভিযানে পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি, আনসার ও সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী) সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন। যৌথ অভিযানে কারও কাছে লুট হওয়া অস্ত্র পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হবে।

গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।  

নির্দেশনা অনুযায়ী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্ধারিত স্থানে আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দিলে তা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য হবে। তাছাড়া, কোনো ব্যক্তির কাছে পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষিত থাকলে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানায় জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এর আগে গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। ওই সময়ে পর্যন্ত যাদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তাদের আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্রসংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে হবে। ’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরেক কর্মকর্তা বলেন, অস্ত্রসহ চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে জোর দেওয়া হবে। সীমান্ত এলাকায় কোনো অপরাধী পলাতক থাকলে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আনা হবে আইনের আওতায়।  

গতকাল সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার দিন মঙ্গলবার শেষ। রাত ১২টা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করবে। আপনারা অস্ত্র উদ্ধারসহ সব বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ দেখতে পাবেন।

news24bd.tv/DHL