ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত শাহিন মারা গেছেন

২৫ আগস্ট রাতের আনসারকাণ্ড

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত শাহিন মারা গেছেন

অনলাইন প্রতিবেদক

সন্তানকে বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন বাবা শাহিন হাওলাদার। ঘটনা ২৫ আগস্ট রাতের। ওইদিন রাতে আনসাররা যখন সচিবালয় ঘেরাও করে তখন তার ছেলে হাসান আহমেদ বিশাল আটকা পড়েছিলেন সচিবালয়ে।

ছেলেকে বঁচাতে গিয়ে আনসারদের নির্মম পিটুনিতে মাথায় আঘাত নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে ভর্তি হতে হয় শাহিন হাওলাদারকে।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর বাঁচলেন না!

মো. শাহিন হাওলাদার, বয়স ৪৫ বছর। পেশায় গাড়িচালক। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢামেকের আইসিইউতে মারা যান তিনি।

মৃত শাহিন হাওলাদারের বাড়ি খুলনা বিভাগের মোংলা থানার কচুবুনিয়া গ্রামে।

বাবার নাম সোবহান হাওলাদার। দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ পরিবার নিয়ে থাকতেন খিলগাঁওয়ের গোড়ানের ৩০ নম্বর রোডের একটি বাসায়।

হাসপাতালের মর্গে তার ছেলে হাসান আহমেদ বিশাল জানান, বিশাল ও তার বন্ধুরা ছাত্র আন্দোলনের প্রথম থেকেই রাজপথে ছিলেন। গত ২৫ আগস্ট সাধারণ আনসার সদস্যরা যখন সচিবালয় ঘেরাও করেন, পরে সেখানে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হলে তাদের ওপর হামলা করে আনসাররা। এটি শুনে তারা কয়েকজন বন্ধু মিলে সচিবালয়ের সামনে যান।

এরপর রাত ৯টার দিকে সচিবালয়ের দুই পাশে আনসার সদস্যরা অবস্থান নিলে মাঝখানে আটকা পড়েন বিশালসহ তার বন্দুরা। সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য তখন গাড়ি চালক বাবাকে ফোন দেন বিশাল। উদ্ধার করতে বলেন বাবাকে।

ছেলের বিপদে কি বাবা বসে থাকবেন? ফোনকল পেয়ে সেখানে মুহূর্তেই ছুটে গিয়েছিলেন শাহিন হাওলাদার। সচিবালয়ের সামনে দিয়ে হেঁটে হেঁটে ছেলেকে খুঁজছিলেন তিনি।
ছাত্র ভেবে এসময় আনসার সদস্যরা লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে তাকে। মাথার পেছনে মারাত্মক আঘাত পান শাহিন হাওলাদার।

ছেলে বিশাল জানান, অনেকক্ষণ পর তার বাবার ফোনে কল করলে তখন এক শিক্ষার্থী ফোন রিসিভ করে জানান, আনসার সদস্যরা তার বাবাকে আঘাত করেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাবার কাছে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। ভর্তি করেন হাসপাতালের আইসিইউতে। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে মারা যান শাহিন হাওলাদার।

বিশালের এক বন্ধু রমজান হাওলাদার বলেন, সেদিন উনি আমাদের সচিবালয়ের সামনে থেকে আনার জন্য গিয়েছিলেন। তবে এতো মানুষের মাঝে আমাদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এসময় আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থী মনে করে তাকেও পিটিয়ে আহত করে। তাকে পেটানোর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওর মধ্যেও তাকে মারধর করতে দেখা গেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সানাউল হক জানান, শাহিন হাওলাদারের মরদেহটি ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় একটি ‘অপমৃত্যু’র মামলা দায়ের হয়েছে।

news24bd.tv/JP
 

এই রকম আরও টপিক