পরকীয়ার কারণে মাকে হত্যা করেন এমপিকন্যা, ১৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন

হত্যাকাণ্ডের শিকার সেলিমা খান (বায়ে), সুবল কুমার রায় (মাঝে) শামীমা খান মজলিশ পপি (ডানে)।

পরকীয়ার কারণে মাকে হত্যা করেন এমপিকন্যা, ১৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন

অনলাইন ডেস্ক

সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য শামসুদ্দোহা খান মজলিশের স্ত্রী সেলিমা খান মজলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যকাণ্ডের ১৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন হলো।

পরকীয়া ও সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেলিমা খানকে খুন করা হয় বলে দাবি করেছে পিবিআই। এ হত্যাকাণ্ডে পরিবারের সদস্যও জড়িত বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডির পিবিআই সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেলিমা হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নিহত সেলিমার মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপি (৫৭), ইলেকট্রিশিয়ান সুবল কুমার রায় (৫০) এবং গৃহকর্মী আরতি সরকার। গত ৪ জুন সাভারের ভাগলপুর এবং পাকিজা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।


 
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মামলাটির তদন্ত হলেও মূল আসামি ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আগের তদন্তকারীরা। কিন্তু পিবিআইয়ের এসআই ইমরান আহমেদ গত ৩০ মে সুবল কুমার রায়কে গ্রেপ্তার করলে হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। সুবলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিহতের মেয়ে পপি ও আরতী সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ হিসেবে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার জানান, গ্রেপ্তারকৃত সুবল কুমার রায় এবং নিহতের বড় মেয়ে শামীমা তাহের পপির মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এ ছাড়াও পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ এবং রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়।
 
২০১১ সালের ১৪ জুন ভোরে সেলিমা খানকে গলা ও পেটকাটা অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। চারদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

পিবিআই প্রধান জানান, হত্যাকাণ্ডটি মূলত সংঘটিত হয় নিহতের বড় মেয়ে পপির পরিকল্পনায়। ঘটনার দিন সেলিমা খান মজলিশের বড় মেয়ে শামীমা তাহের পপির সহায়তায় তার গলার দুই পার্শ্বে ফল কাটার ছুরি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। পরে তারা বাসার দ্বিতীয় তলার ডাইনিং রুমে সেলিমাকে ফেলে রেখে চলে যায়।

গ্রেপ্তারকৃত সুবল কুমার পিবিআইকে দেওয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, নিহতের বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপির সহায়তায় ভিকটিমের বাসার ডাইনিং রুমে নিহতের গলার দুই পার্শ্বে ফল কাটার ছুরি দিয়ে পোঁচ মেরে রক্তাক্ত করে। পরে সেই অবস্থায় প্রতিবন্ধী ছেলে সেতুর কক্ষে খাটের চাদরের ওপরে একটি পুরাতন পত্রিকা বিছিয়ে সেলিমা খানের মাথার কাছে দুটি বালিশ দিয়ে চাপা দিয়ে এবং ঘাড়ের নিচে তোষক দিয়ে শুইয়ে রেখে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।

news24bd.tv/কেআই