ইউক্রেনকে সহায়তার কাঠামো মজবুত করতে ন্যাটোর তোড়জোড়

সংগৃহীত ছবি

ইউক্রেনকে সহায়তার কাঠামো মজবুত করতে ন্যাটোর তোড়জোড়

অনলাইন ডেস্ক

ইউক্রেন এখনো ন্যাটোর সদস্য পদ থেকে অনেক দূরে থাকলেও দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক ও সমন্বয় আরো নিবিড় হচ্ছে। বিশেষ করে ইউক্রেনের জন্য জোটের সদস্য দেশগুলোর সামরিক সহায়তা আরো কার্যকর করার লক্ষ্যে ন্যাটোকে কেন্দ্রীয় ভূমিকা দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। সেই পথে অগ্রসর হতে এবার ন্যাটোর সদস্যরা কিয়েভে বিশেষ দূত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল। বেসামরিক সেই কর্মকর্তা ইউক্রেনের জন্য রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে সমন্বয়ের কাজ করবেন।

খবর ডয়চে ভেলে।

আগামী ৯ থেকে ১১ জুলাই ওয়াশিংটনে ন্যাটোর ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে শীর্ষ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনের জন্য ন্যাটোর বিশেষ সহায়তা ও প্রশিক্ষণের মিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। প্রায় এক দশক ধরে কিয়েভে ন্যাটোর এক দপ্তর রয়েছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে বেড়ে চলা অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনের জন্য ন্যাটোর সহায়তার স্তম্ভ আরো শক্তিশালী করতে নানা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় এলে সেই সামরিক সহায়তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে।

তাই সামরিক জোট হিসেবে ন্যাটোর মাধ্যমে মজবুত কাঠামো গড়ে তুলে যুক্তরাষ্ট্রের একক সিদ্ধান্তের ক্ষমতা কিছুটা দুর্বল করার চেষ্টা চলছে বলে অনেক সামরিক পর্যবেক্ষক মনে করছেন। এখনো পর্যন্ত মার্কিন নেতৃত্বে কনট্যাক্ট গ্রুপের মাধ্যমে সেই সহায়তার ক্ষেত্রে সমন্বয় করা হয়েছে। ন্যাটো ইউক্রেনের জন্য আরো সহায়তার তোড়জোড় করছে।

ট্রাম্প বারবার বলছেন, ক্ষমতায় এলে তিনি নাকি রাতারাতি ইউক্রেন সংকটের সমাধান করবেন। তবে নিজের শান্তির ফর্মুলা নিয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলছেন না। তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স গত সপ্তাহে ট্রাম্পের দুই উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ইউক্রেনকে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করতে বাধ্য করা হতে পারে। তা না করলে ট্রাম্প ইউক্রেনের জন্য সহায়তা বন্ধ করার হুমকি দিতে পারেন। ট্রাম্প নিজে অবশ্য বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শর্ত মানতে রাজি নন। পুতিন ইউক্রেনে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত চারটি অঞ্চলের কর্তৃত্ব স্থায়ী করার বদলে যুদ্ধ বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ করার স্বার্থে ইউক্রেন কোনো আপস করে রাশিয়ার হাতে নিজস্ব ভূখণ্ড তুলে দিতে প্রস্তুত নয়। ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে তিনি বলেন, তবে ‘ন্যায্য শান্তি’ হাসিল করতে ইউক্রেন যেকোনো পরামর্শ শুনতে প্রস্তুত। ইয়ারমাক আশা করেন, দলমত নির্বিশেষে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সহায়তা দিয়ে যাবে।

শুধু ন্যাটো নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যেও ইউক্রেনের জন্য সহায়তার ক্ষেত্রে ঐকমত্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। ফ্রান্সে সংসদ নির্বাচনে উগ্র দক্ষিণপন্থী আরএন দল আরো সাফল্য পেলে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ইউক্রেনকে কতটা সাহায্য করতে পারবেন, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। ইইউর সবচেয়ে মস্কো ঘনিষ্ঠ দেশ হিসেবে হাঙ্গেরি ছয় মাসের জন্য সভাপতিত্ব গ্রহণ করেছে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম কিয়েভ সফর করেছেন। তিনিও অনেকটা ট্রাম্পের সুরে ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে যত দ্রুত সম্ভব রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার লক্ষ্যে সাময়িক অস্ত্রবিরতির ডাক দিয়েছেন। জেলেনস্কি তাকে ইউক্রেনের নিজস্ব শান্তির উদ্যোগে সামিল হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দুই নেতার মধ্যে অতীতে বারবার সংঘাত দেখা গেছে।

news24bd.tv/DHL

এই রকম আরও টপিক