১০ দিন পর মোবাইল ইন্টারনেট চালু

মোবাইল ইন্টারনেট

১০ দিন পর মোবাইল ইন্টারনেট চালু

অনলাইন ডেস্ক

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১০ দিন বন্ধ থাকার পর মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়েছে। আজ রোববার (২৮ জুলাই) বিকেল ৩টার কিছু সময় আগে থেকেই ফোরজি নেটওয়ার্ক চালু হয়। তবে নেটে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে গ্রহকরা অভিযোগ করেছেন। অপারেটররা বলছেন, ধীরে ধীরে গতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন তারা।

এদিকে, দেশে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টিকটক, এক্স (সাবেক টুইটার) বন্ধ রয়েছে। তবে অধিকাংশ ব্যবহারকারী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মোবাইল ইন্টারনেট ফেরার তথ্য জানিয়েছেন। তারা মূলত ভিপিএন ব্যবহার করে ফেসবুকে সক্রিয় রয়েছেন।

আলমাস হোসাইন নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও ইন্টারনেট ফেরার খবর জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

তিনি বর্তমানে লক্ষ্মীপুরে গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। সেখানেও বিকেল ৩টার আগেই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সক্রিয় হয়েছে বলে পোস্টে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যাক, অবশেষে মোবাইল ইন্টারনেট পাওয়া গেলো। কিন্তু কাজই তো করছে না। এত স্লো নেট দিয়ে কী হবে?’

রোববার বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ব্রিফিংয়ে বিকেল ৩টা থেকে মোবাইল ইন্টারনেট চালু করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তারও আগে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত মোবাইল অপারেটরগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন তিনি। সেখানে এ সিদ্ধান্ত হয়।

মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অনেক গ্রাহকের ডাটা প্যাকেজ কেনা থাকলেও তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। গ্রাহকদের এ ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সব মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে ৫ জিবি করে ডাটা বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার মেয়াদ হবে তিনদিন। ইন্টারনেট চালুর পর এ ডাটা প্যাকেজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব অপারেটরের সিমে চালু হয়ে যাবে।

এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, যারা মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক, তাদের অধিকাংশেরই ডাটা প্যাকেজ কেনা ছিল। আসলে তাদের ব্যক্তিগতভাবে কোনো দোষ নেই। নেটওয়ার্কটা নিরবচ্ছিন্নভাবে না থাকায় তারা আসলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেননি।

তিনি বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে আলোচনা সাপেক্ষে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যারা মোবাইল ইন্টারনেট চালুর পর ফোরজি সেবায় যুক্ত হবেন, তখন প্রত্যেক মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক ৫ জিবি করে বোনাস ডাটা প্যাকেজ পাবেন। এ প্যাকেজের মেয়াদ থাকবে তিন দিন। এ বিষয়ে সব মোবাইল অপারেটরগুলো সম্মত হয়েছেন।

তবে ইন্টারনেট চালুর পর তাৎক্ষণিক কোনো গ্রাহক ৫ জিবি ইন্টারনেট পেয়েছেন বলে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

ফেসবুক, টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে তলব করেছে বিটিআরসি। তাদের ৩ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী—বুধবারের (৩১ জুলাই) মধ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে সশরীরে হাজির হয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ফেসবুক তাদের পলিসি অনুযায়ী যেসব কনটেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্লক করে দেওয়ার কথা, সেগুলো সাবলীলভাবে প্রচার করে যাচ্ছে। সেসব কনটেন্টের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কেন তারা ব্যবস্থা নেয়নি, সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের প্রতিনিধিদের বিটিআরসিতে তলব করা হয়েছে। তাদের সশরীরে এসে ব্যাখ্যা দিতে হবে।

আপাতত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক বন্ধ থাকছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের কাছে বিটিআরসি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে যে ব্যাখ্যা চেয়েছে, তা স্পষ্ট করে না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধে তাদের কার্যক্রম খুলে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে সরকার।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৮ জুলাই সারাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। এর পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সীমিত পরিসরে চালু করা হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা।

news24bd.tv/আইএএম