ইবিতে ছাত্রদল কর্মীদের বিরুদ্ধে সিনিয়রকে মারধরের অভিযোগ

সংগৃহীত ছবি

ইবিতে ছাত্রদল কর্মীদের বিরুদ্ধে সিনিয়রকে মারধরের অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি

ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে শাখা ছাত্রদলের কর্মীরা মারধর করেছেন বলেন অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাত পৌঁনে আটটায় লালন শাহ হলে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আইন বিভাগের এনামুল হক ইমন ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। অন্যদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজুল হক রুমন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় এনামুল হক ইমনের নেতৃত্বে ১০-১২ জন ছাত্রদল কর্মী ওই শিক্ষার্থীর কক্ষে (৪১৫ নং কক্ষ) যায়। এসময় তাদের মধ্যে পূর্বের একটি ব্যক্তিগত ঝামেলা নিয়ে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার রুমমেটদের আটকে রেখে রুমনকে মারধর করে৷ পরে তাকে রোববারের মধ্যে হল ছাড়ার হুমকি দেয়।

জানা যায়, রুমন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।

এছাড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। পড়াশোনা শেষ হওয়ায় রুমন গত ছয় মাস আগে হল ছেড়ে দেয়।

ভুক্তভোগী মিনহাজুল হক রুমন বলেন, আমি খুলনা যাওয়ার উদ্দেশে ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। তবে হঠাৎ খুলনা যাওয়া স্থগিত হওয়ায় ক্যাম্পাসে কয়েকদিন থাকতে হচ্ছে। আজ রাতে দশ-বারোজন মিলে আমার রুমে এসে আমাকে মারধর করে এবং আগামীকালের মধ্যে হল ছাড়ার হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এনামুল হক ইমন বলেন, রুমন ভাই দশ মাস আগে আমার কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়৷ তবে সেসময় তিনি ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় থাকায় আমি কোনো ধরনের বিচার পাইনি। ছাত্রলীগের সভাপতির রুমে আমাকে আর আমার বাবাকে ডেকে হ্যান্ডশেক করিয়ে মিটিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত হয়েছিলাম৷ এজন্য আজ আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে৷ তখন আমরা তাকে মারধর করি। আমি পূর্বের ঘটনার বিচার না পেয়ে এটা করেছি।

অভিযুক্ত ইমনের সঙ্গে আসা তার এক সহপাঠী আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শ্রাবণ বলেন, কয়েকমাস আগে আমার বন্ধুর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে আজ আমরা তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে একপর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটে। তাদের ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমরা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বলেন, তারা এরআগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলো বলে আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। তারা আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটাচ্ছে। শ্রাবণসহ আরও কয়েকজন আমাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে আসে। কিন্তু আমরা এমন কাউকে আমাদের দলে যুক্ত করতে চাই না, যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। ছাত্রদল কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপরাজনীতি প্রশ্রয় দেয় না।

এর আগে, গত বছরের ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় ‘দ্রুত গতিতে বাইক চালানোর’ কারণে ইমনকে থাপ্পড় দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয় মিনহাজুল হক রুমন। তখন রুমন শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকায় এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কাঙ্ক্ষিত বিচার পাননি বলে অভিযোগ  ইমনের। এ ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে আজ রুমনকে মারধর করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

news24bd.tv/FA