মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট মোড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শহরের উত্তর ইসলামপুরের বাসিন্দা সজল মোল্লাকে (৩০) হত্যার দায়ে ৪৫১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে মুন্সিগঞ্জে আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হলো।
এই মামলায় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতা এবং জনপ্রতিনিধিসহ ৩০১ জনের নাম রয়েছে। অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনসহ সর্বমোট আসামি করা হয়েছে ৪৫১ জনকে।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সদর থানায় মামলাটি দায়ের হয়। এতে বাদী হয়েছেন নিহত সজলের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২০ আগস্ট রিয়াজুল ফরাজীকে গুলি করে হত্যার দায়ে তার স্ত্রী রুমা বেগম বাদী হয়ে প্রথম হত্যা মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারের তথ্য মতে মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিস উজ্জামান, মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহানা তাহমিনা, যুবলীগ নেতা জালালুদ্দিন রুমি রাজন, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম নোবেল, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর সাজ্জাত হোসাইন সাগর, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান লাকুম, সরকারি হরগঙ্গা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নিবির আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির মাষ্টার, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভুইয়া, শহর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রায়হানুজ্জামান রাসেল, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেল, যুবলীগ নেতা আব্দুর রহমান গাজী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন প্রমুখ।
জনপ্রতিনিধিরা হলেন, পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, চরকেওয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন ভুইয়া, আধারা ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, বাংলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন পীর, শিলই ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ মৃধা, মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারি, মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল রানা রানু, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, পঞ্চসার ইউপি সদস্য জাহিদ হাসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে জেলা সদরের চরাঞ্চল থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, তার পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব ও তার স্ত্রী মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য অস্ত্র-ককটেল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন ২-৩ হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারী। আগের দিনই তারা মোবাইল ফোন ও সাক্ষাতে এই নির্দেশ পান। ওইদিনের ঘটনায় তিনজন নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। এছাড়া অন্তত ৯৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন দেড় শতাধিক।
আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন- রিয়াজুল ফরাজী (৩৮), মো. সজল মোল্লা (৩০) ও নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজল (২২)। নিহতদের মধ্যে রিয়াজুল মৃত কাজী মতিনের ছেলে, সজল আলী আকবর মোল্লার ছেলে ও ডিপজল সিরাজ সরদারের ছেলে। এরা সকলেই শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা।
news24bd.tv/তৌহিদ