পেট্রোবাংলায় চাকরি স্থায়ীকরণে কর্মচারীদের ১ দফা দাবি

পেট্রোবাংলায় চাকরি স্থায়ীকরণে কর্মচারীদের ১ দফা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে পেট্রোবাংলা ও পেট্রোবাংলার আওতাধীন ১৩টি কোম্পানিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের ১ দফা দাবি পূরণের আলটিমেটাম দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীরা।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনে এমনই দাবি জানিয়েছে পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন সকল কোম্পানির অস্থায়ী কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ।

এসময় কোম্পানির স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অস্থায়ী কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্যের একটি চিত্র তুলে ধরে তারা বলেন, সরকারি গ্রেডে বেতনে স্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীরা সরকারি গ্রেডে বেতন, প্রফিট বোনাস ৫%, উৎসব বোনাস, চিত্তবিনোদন ভাতা, এক্সজেসিয়া বোনাস, ইনসেনটিভ বোনাস, পোশাক ভাতা, সন্তানদের জন্য চিকিৎসা ভাতা, বৈশাখী ভাতা, ইনক্রিমেন্ট, সকল প্রকার ছুটিসহ সকল প্রকার সুযোগ সবিধা পেয়ে থাকেন।

অপরদিকে অস্থায়ী কর্মচারী শুধু মাসিক বেতন ও গাড়ি চালকদের অধিকাল ভাতা পেয়ে থাকে যা ২০১৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত।

আউটসোর্সিং নীতিমালা ২০১৮ বলবৎ থাকলে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। যা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য অন্তরায়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন স্থায়ী কর্মচারীদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা থাকলে এই নীতিমালার অনুযায়ী আমাদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা নেই। ফলে তারা বছরের পর বছর একই বেতন কাজ করে যাচ্ছি।

সেইসাথে 'আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালা, ২০১৮' প্রণয়ন করার ফলে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একই পদের স্থায়ী ও আউটসোর্সিং-এর মধ্যে বেতন বৈষম্য তৈরি হয়েছে। বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বছরের দুইটি ঈদ, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসব এবং বাংলা নববর্ষ 'বৈশাখ' উপলক্ষে তাদের কোনোপ্রকার ভাতা প্রদান করা হয় না বলেও অভিযোগ করেন তারা।

বক্তারা বলেন 'বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬'-এর নবম অধ্যায়ের 'কর্মঘণ্টা ও ছুটি' এর ১০৮ নাম্বার ধারায় অধিকাল কর্মের জন্য অতিরিক্ত ভাতা প্রদান করার নিয়ম থাকলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের নাম করে অস্থায়ী কর্মচারীদের অতিরিক্ত কর্মের জন্য অতিরিক্ত ভাতা প্রদান করা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়াও অস্থায়ী কর্মচারীদের কোনো ছুটির ব্যবস্থা নেই। তারা অস্থায়ী কর্মচারী হওয়ার কারণে তাদের কোনো প্রকার ছুটি প্রদান করা হয় না। যারা অস্থায়ী নারী কর্মচারী রয়েছেন তাদের মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা নেই। এক্ষেত্রে চাকুরী বাঁচাতে সন্তানকে কোরবানি দিতে হয় অথবা সন্তান বাঁচাতে নিজের উপার্জন আয়ের একমাত্র পথ চাকুরী হারাতে হয় বলেও অভিযোগ তাদের। যেখানে কোম্পানির স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারী হওয়ার কারণে চিত্ত বিনোদনের জন্য সপরিবারে ৭ দিন প্রমোদ ভ্রমণ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ প্রাপ্ত বেসিকের ১ বেসিক সমপরিমাণ টাকা পেয়ে থাকেন যা অস্থায়ীদের প্রদান করা হয় না।

আউটসোর্সিং-এর নীতিমালা অনুযায়ী তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই বলে অভিযোগ জানিয়ে তারা বলেন, চাকরি শেষে বৃদ্ধ অবস্থায় খালি হাতে ফিরে পরিবারের বোঝা হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

এসময় অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত আউটসোর্সিং, মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত সকলকে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে বয়স শিথিল করে স্থায়ীকরণ করার দাবি জানিয়ে বলেন, নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট না দেয়া, একই পদে থাকা সত্ত্বেও স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মচারীদের মধ্যে ভিন্ন বেতন কাঠামোসহ ছুটি থেকে সকল বিষয়ে ব্যাপক বৈষম্যের শিকার তারা। তাই অবিলম্বে তাদের ১ দফা দাবি মেনে নেয়া না হলে দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমে আসার কথাও জানান তারা।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক