একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক কিছু এরইমধ্যে লেখা হয়েছে, আরো লেখা হবে, লেখার দরকার পড়বে। এই রকমের ঘটনা আমাদের জীবনে আর দ্বিতীয়টি ঘটেনি, হয়তো আর ঘটবেও না। এর ইতিহাস লেখা দরকার, নিজেদের জানার ও বোঝার জন্য এবং অগ্রগতির পথে পাথেয় সংগ্রহের জন্যও। মুক্তিযুদ্ধে ভুক্তভোগী, ত্যাগী একজন নন, অনেকজন। তাঁরা অসাধারণ কেউ নন, সাধারণ মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে তাঁদের যে অভিজ্ঞতা, তা ছিল মর্মান্তিক। এ নিয়ে তাঁরা বড়াই করেননি। করুণা আকর্ষণের চেষ্টা করেননি, বেদনার সঙ্গে সেই অতিদুঃসহ দিনগুলোকে স্মরণ করেছেন, যেগুলো তাঁরা ভুলতে পারলে খুশি হতেন, কিন্তু সেগুলো এমনই গভীরভাবে স্মৃতিতে প্রোথিত যে ভুলে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। তাঁরা দেখেছেন, জেনেছেন, বুঝেছেন এবং সহ্য করেছেন। তাঁদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার স্মৃতিকথনে অনাড়ম্বর নেই, অতিকথন নেই, আভরণ নেই, বক্তব্য একেবারে সাদামাটা...
একাত্তরকে ভুলি কী করে
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

সেনাপ্রধানের সময়োপযোগী বক্তব্য
মেজর জিল্লুর রহমান (অব.)

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের এক বক্তব্য নিয়ে তোড়পাড় শুরু হয়েছে। তিনি দেশের বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। দায়িত্বশীল পদে থেকে তার কথা বলেছেন। তার কথার সারাংশ হচ্ছে, তিনি নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে ফিরে যেতে চান। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার সেই দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তার প্রত্যাশা ফেয়ার ইনক্লুসিভ নির্বাচন। হয়তো আগামী ডিসেম্বর নাগাদ নির্বাচন হবে। তার আর কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। তিনি বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণ আছে। নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করে বিভেদ সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। তিনি ন্যায্য কথাই বলেছেন। ৫ আগস্টের আগে-পরে সংস্কার করে এক নতুন দেশ গড়ার লক্ষ্যে যে অটুট ঐক্য ছিল, এখন সে প্রত্যাশা অনেকটাই ম্লান। রাজনৈতিক দলের মধ্যে জলদি ক্ষমতায় পা রাখার লড়াই আমরা দেখছি। সংস্কারের আগে...
একটি মৃতপ্রায় দলের আত্মকথা
মহিউদ্দিন খান মোহন
নিজস্ব প্রতিবেদক

সুপ্রিয় পাঠক, আমি আপনাদের অতিপরিচিত দল আওয়ামী লীগ। আজ আমি মুমূর্ষু অবস্থায় উপনীত, মৃতপ্রায়ও বলতে পারেন। আমার এ নির্জীব দেহে আর কখনো প্রাণের সঞ্চার হবে কি না, তা একমাত্র উপরওয়ালাই জানেন। আমাদের দেশে অনেক উদাহরণ আছে, পূর্বপুরুষেরা ধনসম্পদের পাহাড় গড়ে যান, আর অধস্তন পুরুষেরা তা ধ্বংস করে ফেলে। আমার অবস্থা আজ সেরকম। মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর হাতে প্রতিষ্ঠিত এবং তাঁরই অতি কাছের শিষ্য শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে পত্রপল্লবে বিকশিত আমি আজ জীবনমৃত্যুর কিনারায় দাঁড়িয়ে। মুজিবকন্যার অপরাজনীতির কারণে আজ আমি সর্বসাধারণের কাছে নিন্দিত, ধিক্কৃত। আমার জন্মকালীন নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমান আমার প্রধান চালক হয়ে উঠলেও আমার জন্মের সময় তিনি ছিলেন জেলে। হুজুর ভাসানী তাঁর এ শিষ্যকে দলের...
ঘুষের রেট তিন গুণ, তবুও নড়ে না ফাইল
গোলাম মাওলা রনি

নিবন্ধের শুরুতে একটি বাস্তব ঘটনার কথা বলি। সম্প্রতি আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পরিচয়ে জনৈক তরুণ ব্যবসায়ী ফোন করলেন। বয়স ত্রিশের নিচে হলেও ব্যবসার বয়স ১০ বছরের মতো। চার বন্ধুকে নিয়ে প্রযুক্তি খাতে ব্যবসা করেন। দেশিবিদেশি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন এবং ইতোমধ্যেই সুনাম-সুখ্যাতি অর্থবিত্তের ঈর্ষণীয় এক অবস্থান তৈরি করে ফেলেছেন। হাল আমলে ব্যবসাপাতি কেমন চলছে জিজ্ঞাসা করতেই মনে হলো টেলিফোনের অপর প্রান্তের কণ্ঠ ক্ষণিকের তরে কেঁপে উঠল। তার আবেগ-উচ্ছ্বাস এবং সফলতার গল্প হোঁচট খেল। তিনি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, এতক্ষণ যা বললাম তা অতীত কাহিনী। বর্তমানে সংসার চলছে না, কয়েক শ প্রযুক্তিবিদ নিয়ে গড়া কোম্পানিটি যেকোনো সময়ে বন্ধ হতে পারে। তরুণের কণ্ঠের বিষাদ আমাকেও আহত করল। কারণ আমার নিজের ব্যবসাবাণিজ্যের অবস্থা কী, তা বলে...