মধ্যরাতে ‘রাজাকার’ স্লোগান তোলা ওরা কারা?

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা

মধ্যরাতে ‘রাজাকার’ স্লোগান তোলা ওরা কারা?

অনলাইন ডেস্ক

সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কার এর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মিছিল সমাবেশে গতকাল রোববার মধ্যরাতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এ দিন সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সংবাদ সম্মেলন ছিল।  

সংবাদ সম্মেলন শেষ হলো। তখনও কিছু হয়নি।

কিন্তু রাতে প্রায় একই সময়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিলকারীরা কয়েকটি স্লোগান দিলো। সেগুলো প্রায় একইরকম।

সেগুলো হচ্ছে:
‘তুমি কে আমি কে - রাজাকার, রাজাকার’, ‘কে বলেছে কে বলেছে- সরকার সরকার’ ‘চাইতে গেলাম অধিকার- হয়ে গেলাম রাজাকার’। এরইমধ্যে ‘তুমি কে আমি কে - রাজাকার, রাজাকার’ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।

ছাত্ররা অবশ্য বলছে 'প্রধানমন্ত্রী সবাইকে রাজাকার বলায় তারা এমন স্লোগান দিয়েছে। এটা একটা স্যাটায়ারধর্মী স্লোগান। এর বেশি কিছু না'।

কিন্তু স্যাটায়ারেরও তো সীমা আছে। রাজনীতি আছে। এই স্লোগানের রাজনীতি কী?
দেশকে রাজাকার প্রজন্মে প্রতিষ্ঠা করা? মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করা? যদি এমন হয় তবে এই আন্দোলনের পেছনের শক্তি করা? নিশ্চয়ই

রাজাকারপ্রেমী কোনো দল?
তাদের এমন বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ শে মার্চ ছাত্র শিক্ষকদেরকে গণহত্যা করেছে রাজাকাররা, সেই রাজাকারের পক্ষে রাজাকারের সন্তান বলে শ্লোগান দিতে লজ্জা করে না?’

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, যারা নিজেদেরকে রাজাকার বলে পরিচয় দেয়, তাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদের রক্তস্নাত লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে বা সে পতাকা কপালে বেঁধে নিয়ে মিছিল করবার কোনো অধিকার থাকতে পারে না।  
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যারা, যারা মেধাবীদের বাংলাদেশ চান, এমনকি কোটা নিয়ে যারা আন্দোলন করছিলেন তাদের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিল, তারাও মধ্যরাতে আন্দোলনকারীদের এমন শ্লোগানে চমকে উঠেছেন। তাদের প্রশ্ন এ কোন বাংলাদেশ? এরকম শ্লোগানের আলামত কী?

ফেসবুকে অনেকেই লিখছেন, যেমন আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ বলেছেন, ‘কিন্তু এরা ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ কথাটাকেই একটা ঠাট্টা তামাশায় পরিণত করতে চাইছে। আমি তো অহংকার করে বলি যে হ্যাঁ, আমি চেতনাবাজ। অবশ্যই চেতনাবাজ। শতভাগ চেতনাবাজ। আমি ধর্মনিরপেক্ষতা চাই, কেননা আমি চেতনাবাজ। আমি গণতন্ত্র চাই, কেননা আমি চেতনাবাজ। আমি একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতি গঠন করতে চাই যাতে করে সমাজতন্ত্রের দিকে যাত্রা করতে পারি। কেননা আমি চেতনাবাজ। আপনার যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা চেতনাবাজদের নিয়ে সমস্যা থাকে, থাকতে পারে। আমরা রাজাকারদের স্থান দিব না। ’

উল্লেখ্য, গতকাল রোববার চীন ফেরত পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্রিক এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতি-নাতনীরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনীরা পাবে? এটা আমার দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন।

news24bd.tv/ডিডি