অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের যৌক্তিক সময় দেয়া হবে: ফখরুল

সংগৃহীত ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের যৌক্তিক সময় দেয়া হবে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন এই সরকার যখন দেশকে একটি স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে, দেশ যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছেন। এটি সফল হবে না। অতীতের সকল জঞ্জাল পরিষ্কার করে সত্যিকারার্থে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হবে। এজন্য রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে সংষ্কার করে, গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যৌক্তিক সময় সময় দিতে চাই।

তবে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়। বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মাত্র তিন মাসে সকল জঞ্জাল দূর করে একটি সুষ্ঠ নির্বাচন উপহার দিয়েছিলেন।

গত শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় সিলেটের একটি হোটেলে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি যৌথভাবে একটি সভার আয়োজন করে। সভা শেষে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে সিলেটে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের একটি অংশ ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে এমন আকষ্মিক বন্যা আমরা দেখিনি। ভারত তাদের বাঁধ খুলে দেওয়ায় এই ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা বাঁধ খুলে দেয়ার আগে কোন পূর্বাভাসও দেয়নি। উজানের পানির বেশীরভাগই ভারত থেকে আসে। অভিন্ন নদী সমূহের পানি বণ্টনের কোন সূরাহা আজও হয়নি। পানি আগ্রাসনকে তারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সিলেট থেকেই এই পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এম. ইলিয়াস আলী। এর ফলশ্রুতিতে তাকে গুম করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত তারা জনসমর্থনহীন ভাবে ক্ষমতায় ছিল। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা শুরু করেছিল।  এবারও তারা একদলীয় সশাসন ব্যবস্থা করার প্রস্তুতি চুড়ান্ত করেছিল। কিন্তু দেশের সাধারণ ছাত্রজনতার প্রতিরোধের মুখে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। মানুষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়ে মুখ খুলে কথা বলতে পারত না। সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকে এই আইনে দমন করা হতো। এখন মানুষ বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে দেব।

তিনি বলেন, ছাত্রজনতার এই বিপ্লবে সিলেটের সাংবাদিক আবু তুরাব সহ অসংখ্য মানুষ পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেছেন। আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১২ সাল থেকে আমরা এই সংগ্রাম করছি। সেই থেকে আমাদের প্রায় ৭০০ জনকে গুম করা হয়েছে। প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার গায়েবী মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপির প্রায় ৬০ লক্ষ নেতাকর্মী আসামি।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন। তিনি কখনো মাথানত করেননি। আমাদের তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমরা আইনিভাবে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছি। এম. ইলিয়াস আলী সহ গুম হওয়া সকলকে নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন, জাতিসংঘের একটি তদন্ত দলও এসেছে। আমরা এখন আশাবাদী যে, আমরা সঠিক তথ্য পাব। তবে সরকার সুনির্দিষ্ট ভাবে এখনো কিছু বলেনি। আমরা পরিষ্কারভাবে তাদের অবস্থান  জানতে চাই।

news24bd.tv/JP