ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে সুনামগঞ্জের আক্তার হোসেন (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে দালালচক্র। এখন সেখানকার হাসপাতালে বেওয়ারিশ হিসেবে পড়ে আছে তাঁর মরদেহ।
হাসপাতালে মৃত যুবকের কাছ থেকে পাসপোর্টের ফটোকপি পেয়ে বাড়িতে যোগাযোগ করে পরিবারকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেখানে বসবাসরত আরেক বাংলাদেশি শ্রমিক। তিনি পরিবারের কাছে হাসপাতালে থাকা ওই যুবকের নিথর ছবি ও ভিডিও পাঠিয়েছেন।
এ ঘটনায় পরিবারে কান্নার মাতম উঠেছে। স্থানীয় দালাল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিহত যুবকের স্বজনরা। লিবিয়ায় নিহত আক্তার হোসেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মুড়ারবন্দ গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে।
পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আক্তার হোসেনের সঙ্গে জামালগঞ্জের হরিপুর গ্রামের হুমায়ুন মিয়া ও সদর উপজেলার শাফেলা গ্রামের আক্তার মিয়ার যোগাযোগ হয়।
তারা তাকে জানান, ১১ লাখ টাকা দিলে ইতালি সহজে যাওয়া যাবে। ইতালির স্বপ্নে বিভোর আক্তার হোসেন ও তার পরিবার হুমায়ুনের দেওয়া তার স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এককালীন ১০ লাখ টাকা জমা করেন। পরে আক্তারকে দুবাই থেকে লিবিয়া নেওয়া হয়। কথা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে গেইমে না তুলে আরো টাকার জন্য নানা ছুতায় হুমকিধমকি দেন হুমায়ুন।
আক্তার পরিবারের কাছে এসব কথা জানালে আবারও হুমায়ুনের ভাই আফজল, হুমায়ুনের স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে এক মাস আগে আরো নগদ তিন লাখ টাকা দেন সুদে এনে। লিবিয়ায় আক্তারকে জিম্মি করে ও মারধর করে আরো টাকা দাবি করেন হুমায়ুন। পরে আবারও আরও তিন লাখ টাকা জমি বিক্রি করে দেন আক্তারের পরিবার। কিন্তু বারবার টাকা নিয়েও তাকে ইতালি না পাঠানোয় প্রতিবাদ করেন আক্তার। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে হুমায়ুন ও অন্য মানবপাচারকারীরা আক্তারকে মাথায়, বুকে, কানে আঘাত করেন।
তারা তাকে মেরে একটি সড়কের পাশে ফেলে রেখে যান। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানকার পুলিশ আক্তারকে হাসপাতালে নিয়ে এসে পোস্টমর্টেম করে মর্গে রেখেছে।
আক্তারের ভাই জাকির হোসেন মাসুম বলেন, ‘হুমায়ুন দালালের স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে আমরা ১০ লাখ টাকা পাঠাই। পরে আমার ভাইকে জিম্মি করে তার স্ত্রী, ভাই, শ্বশুর ও শাশুড়িকে দিয়ে আরো ছয় লাখ টাকা নিয়েছে। এরপর গেইমে না তুলে আমার ভাইকে পিটিয়ে খুন করে রাস্তায় ফেলে যান। ’
news24bd.tv/কেআই
