দেশের সব হাসপাতালে পূর্ণ সেবা চালুর ঘোষণা

নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. আব্দুল আহাদ

দেশের সব হাসপাতালে পূর্ণ সেবা চালুর ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সব হাসপাতালে পূর্ণ সেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. আব্দুল আহাদ এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, এখন (আজ) থেকে দেশের সব হাসপাতালে আগের মতো পূর্ণ সেবা চালু থাকবে।

আজ বিকেল পাঁচটায়, সর্বস্তরের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সিনিয়র স্বাস্থ্য সচিব মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

এই বৈঠকে পূর্বনির্ধারিত চারটি দাবির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

নিউরোসার্জারি বিভাগের এ আবাসিক চিকিৎসক বলেন, ‌‘প্রথম দুটি দাবির প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। হামলাকারীদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যেসব হাসপাতাল এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন হয়নি, সেসব স্থানে দ্রুত বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।

সচিব মহোদয় এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। ’

ডা. মো. আব্দুল আহাদ বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, শীঘ্রই এই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হবে এবং স্বাস্থ্য সেবার পরিবেশ আরও নিরাপদ হবে। তৃতীয় এবং চতুর্থ দাবি, যথাক্রমে স্বাস্থ্য পুলিশ গঠন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের বিষয়ে দীর্ঘ ও তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। সচিব মহোদয় দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব দাবির বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে একটি কার্যকর কমিটি গঠন করা হবে, যেখানে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়াও, স্বাস্থ্য সেবার বিভিন্ন অসঙ্গতি, যেমন ক্যাডার বৈষম্য ও রেফারেল সিস্টেমের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ’

নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের দাবিগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছেন। সিনিয়র স্বাস্থ্য সচিবের ভাষ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় "স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন" নিয়ে পূর্ববর্তী খসড়ার আলোকে আরও তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। এই সময়ের ভেতরে পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের খসড়ায় যে অসংগতিগুলো রয়েছে সেগুলো নিয়ে তারা আলোচনা করবেন এবং আরেকটি খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশিত করবেন। চিকিৎসক সমাজ আলোচনা পর্যালোচনা করে সেই খসড়ার ওপরে কোনো সংশোধনী থাকলে তাদের পক্ষ থেকে মতামত পেশ করবেন। তারপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিবর্তিত ও পরিমার্জিত 'স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন' ফরওয়ার্ডিং দিয়ে দেওয়া হবে আইনটি পাশ করানোর জন্য।
আর স্বাস্থ্য পুলিশের ব্যাপারে ওনারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ফরওয়ার্ডিং দিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ নেবেন।

‘অফিস টাইমশেষ হয়ে যাওয়ায় ওনারা লিখিত প্রেস রিলিজ দিতে পারেননি, আগামীকাল লিখিত প্রেস রিলিজ দেবেন এই ব্যাপারে। ’

‘সরকারের এই দৃশ্যমান পদক্ষেপ এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা সব হাসপাতালে পূর্ণ সেবা পুনরায় চালুর ঘোষণা দিচ্ছি। ’

তিনি বলেন, এই আন্দোলনে আমাদের পাশে থেকে সর্বদা সহযোগিতা করার জন্য আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডাক্তার আসাদুজ্জামান স্যার, অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল হাসান স্যার, হাসপাতাল প্রশাসন, আমাদের শ্রদ্ধেয় চিকিৎসকবৃন্দ, রেসিডেন্ট ও ট্রেইনি ডাক্তার, ইন্টার্ন চিকিৎসকবৃন্দ, মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং মিডিয়ার ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিশেষভাবে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসারসহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ, যারা আমাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছেন।

আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও ডাক্তারদের যৌক্তিক যে কোনো আন্দোলনে আপনাদের পাশে পাব।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক